দল গঠন, একাদশ নির্বাচন, টস সিদ্ধান্ত, ব্যাটিং অর্ডার…প্রায় সব কিছুতেই প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তবে সেন্ট লুসিয়া টেস্টে সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হকের বাদ পড়া নিয়ে ঘুণাক্ষরেও কিছু জানেন না তিনি।
রোববার রাতে এক অনুষ্ঠানে সেই কথা বলেছেন তিনি,’যেহেতু খেলাটা এখনও চলছে…এটা নিশ্চিতভাবেই টিম ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার। আমি জানতাম একজন বাদ পড়বে। কে সেটা জানতাম না। ওখানে ওরা যেটা ভালো মনে করেছে করেছে। শেষ হলে নিশ্চিতভাবে জানব।’
অধিনায়কত্ব ছাড়ার এক ম্যাচ পরই দল থেকে বাদ পড়তে হয় চরম রান খরায় থাকা মুমিনুল হককে।টানা ৩২ ম্যাচ খেলার পর অবশেষে দল থেকে বাদ পড়েন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এ নিয়ে তৃতীয়বার দল থেকে বাদ পড়েন মুমিনুল।
২০১৩ সালে গলে মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরি করা ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল মুমিনুলের। ক্যারিয়ারের প্রথম ইনিংসে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে মুমিনুল তার আগমণী বার্তা দিয়েছিলেন। পরের ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ৬৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত তৃতীয় টেস্ট খেলার আগে তাকে দর্শক হয়ে থাকতে হয়। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
মুমিনুল হয়ে উঠেন বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ভরসার আরেক নাম। ব্যাট হাতে নিয়মিত রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে নিজের অবস্থান শুধু শক্তিশালীই করেননি, বিশ্ব ক্রিকেটে নিজের নাম ফুটিয়ে তোলেন। এক সময় ম্যাচে টানা ১২ ফিফটির বিশ্ব রেকর্ডেরও সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এ ব্যাটসম্যান।
কিন্তু মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখে এখন মুমিনুল বাদ পড়ার তালিকায়। মাঝে দুই ম্যাচ বাদ পড়েছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কারণে। শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের শততম টেস্টে মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহ, লিটন, তাসকিন কেউ খেলেননি। মুমিনুলের শর্ট বলে দুর্বলতা আছে বলে শ্রীলঙ্কায় ও ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঢাকায় খেলাননি হাথুরুসিংহে। চট্টগ্রামে আবার তাকে ফেরানো হয়।
এরপর সবগুলো টেস্টেই ছিল তার উপস্থিতি। ইনজুরির কারণে কেবল নিউ জিল্যান্ডে ২০১৭ সালে তাকে একাদশের বাইরে থাকতে হয়েছিল। মুমিনুলের অভিষেকের পর বাংলাদেশ ৫৯ টেস্ট খেলেছে। যেখানে তিনি খেলেছেন ৫৪ টেস্ট। পরিসংখ্যান স্পষ্ট বলে দেয়, বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান দলের জন্য কতটা বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। ৫৪ টেস্টে মুমিনুলের রান ৩৫২৯। ব্যাটিং গড় ৩৭.৫৪। সেঞ্চুরি সবচেয়ে বেশি ১১টি।
শেষ ১০ ইনিংসের নয়টিতেই মুমিনুল দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি। মাউন্ট মঙ্গানুইতে ৮৮ রানের ইনিংসের পর ১২ ইনিংসে তার মোট রান ৭৮! এ সময়ে চার ইনিংসেই রানের খাতা খুলতে পারেননি।
মুমিনুলের বাদ পড়া নিয়ে নাজমুল হাসানের কোন ভূমিকা না থাকলেও তিনি বিশ্বাস করেন শিগগিরই সে ফিরবে,’মুমিনুল রান পাচ্ছে না, একটু সাইকোলজিকাল ব্যাপার আছে। দূর্বল টেকনিক বা ফর্ম এগুলো নিয়ে চিন্তা করছি না। তবে যে ধরণের খেলোয়াড় মুমিনুল, সর্বোচ্চ টেস্ট সেঞ্চুরি যার কাছে আছে…এতো ভালো না হলে তো ওকে অধিনায়কত্ব দিতাম না। ওর মতো একটা ভালো খেলোয়াড় এখন রান পাচ্ছে না…আমি নিশ্চিত খুব শিগগিরিই ও ফুল ফর্ম নিয়ে আবার ফেরত আসবে এবং ভালো করবে।’