টুইটার অধিগ্রহণের চুক্তি থেকে সরে আসায় ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করেছে টুইটার। যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার কোর্ট অফ চ্যান্সারিতে এ মামলা দায়ের করে টুইটার। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, টুইটারের মতো একটি প্লাটফরম কেনার চুক্তি সাক্ষরিত হবার পরে ইলন মাস্ক কিভাবে তার মন পরিবর্তন করতে পারে। মাস্ক মনে করেন যে ডেলাওয়্যার চুক্তি আইন সাপেক্ষে টুইটার কোম্পানিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এর কার্যকারিতা ব্যাহত করে স্টকহোল্ডারদের মূল্য নষ্ট করে তিনি চলে যাবেন।
এর আগে টুইটার কেনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘না’ বলে দেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ জুলাই) তিনি এমন ঘোষণা দেন। তখন ইলন জানান, ফেক অ্যাকাউন্টের বিষয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ বিবৃতি দেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি বিশাল ঘোষণা দিয়ে টুইটার কিনে ফেলার তথ্য জানিয়েছিলেন বিখ্যাত উদ্যোক্তা ও বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। টেসলা ও স্পেসএক্স দিয়ে খ্যাতি কুড়ানো ইলনের টুইটার কেনার ঘোষণায় পুরো প্রযুক্তি বিশ্বেই আলোড়ন ওঠে। ইলন দিয়েছিলেন ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটার কেনার ঘোষণা। এর পর টুইটার কর্তৃপক্ষও নির্দিষ্ট বিরতির পর তাতে সম্মতি জানিয়েছিল। আর তখন থেকেই ইলনের পক্ষ থেকে আসতে থাকে টুইটারের খোলনলচে পাল্টানোর হরেক রকমের কথা।
টুইটারে প্রধান ব্যক্তি হওয়ার গুঞ্জনের মধ্যেই গত ১৩ মে ইলন জানিয়ে দেন, টুইটার কেনা আপাতত অস্থায়ীভাবে স্থগিত। কারণ, টুইটারের মোট ব্যবহারকারীর ৫ শতাংশেরও কম অ্যাকাউন্ট স্প্যাম বা ভুয়া—টুইটারের এমন দাবি আমলে নেওয়া হয়েছে। আর এই দাবির সত্যাসত্য টুইটার প্রমাণ করতে না পারলে টুইটার আর কেনাই হবে না। আর জবাবে টুইটার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, চাইলেই এভাবে ‘কিনব না’ বলা যায় না। প্রয়োজনে আদালতের রাস্তায় হাঁটার পরোক্ষ হুমকিও দিয়ে রেখেছিল টুইটার।
মূলত যে কারণ দেখিয়ে টুইটার কেনায় ‘না’ করেন ইলন মাস্ক, সেটি নিয়েও আছে বিতর্ক। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভুয়া বা বট অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা কোনো সহজ কাজ নয়। টুইটার কখনোই এ ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে পারবে না। শুধু টুইটার কেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো প্ল্যাটফর্মের ক্ষেত্রেই নিজেদের ব্যবহারকারীদের মধ্যে ঠিক কতগুলো বট বা ভুয়া, সেটি নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।