সফরের প্রথম দুই অংশে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে মোটেও প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়ে তুলতে পারেনি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে খুব বাজেভাবে। অবশেষে সফরের শেষ অংশে এসে প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়ে তুলতে পারলো। শুধু পারলোই না, সিরিজ জয়েরও দারুণ একটা হাতছানি তামিম ইকবালের দলের হাতে।
গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটে ক্যারিবীয়দের হারিয়ে সিরিজে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। আজ জিততে পারলেই তিন ম্যাচের সিরিজে জয় নিশ্চিত হয়ে যাবে টাইগারদের। শেষ ম্যাচের জন্য আর অপেক্ষা করতে হবে না।
শেষ ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করতে রাজি নয় বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররাও। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে দলের অভিজ্ঞ অলরআউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ সরাসরিই বলে দিয়েছেন, ‘আমরা শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারব না। যেহেতু আমাদের বড় একটা সুযোগ আছে, দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলেই যেহেতু আমরা শান্ত হতে পারব যে আমার সিরিজ জিতেছি। অবশ্যই আমাদের ম্যাচ জিততে হবে, অবশ্যই আমাদের ম্যাচ জেতার জন্যই খেলতে হবে। তবে আরও বেশি ফোকাসড থাকব।’
মিরাজ দৃঢ়তার সঙ্গেই বলে দিয়েছেন, শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবেন না। এই ম্যাচ জিতেই নিজেদের শান্ত করতে চান বাংলাদেশ দলের এই অলরাউন্ডার। সে জন্য ম্যাচ জয়ের লক্ষ্যেই খেলতে নামবেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা।
তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল বাংলাদেশের জন্য সিরিজ জয় এতটা সহজ হতে দেবে না নিশ্চিত। তারাও চাইবে খুব দ্রুত ফিরে আসার।
মেহেদী হাসান মিরাজও মানছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ খুব দ্রুত ফিরে আসার চেষ্টা করবে। তিনি বলেন, ‘ওরা শক্তভাবে ফিরে আসতে চাইবে। আমরাও চেষ্টা করব ওরা ফিরে আসলেও কিভাবে আসতে পারে, সেগুলো নিয়ে ভাবার জন্য।’
ক্যারিবীয়রা শক্তভাবে ফিরতে পারে, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে টিম মিটিংয়ে। তা জানিয়ে মিরাজ বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা সেগুলো নিয়ে কথা বলেছি। অধিনায়ক আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং আমাদের যে মিটিংয়ে হয়েছে সেখানেও কথা হয়েছে কিভাবে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। দিন শেষে ভালো খেলা গুরুত্বপূর্ণ, সবাই পারফর্ম করা গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের কাজটা করতে পারলেই জিততে পারব।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে নিশ্চয়ই ফোকাস করবে তারা প্রথম ম্যাচের প্রথম অংশে কিভাবে ব্যাট করেছে, তা নিয়ে। কারণ প্রথম ২০ ওভারের মধ্যে ৮৮টি বলই তারা খেলেছে ডট। যেটার কারণে শেষের দিকে একের পর এক উইকেট হারাতে হয়েছে তাদের।
১১০ রানের মধ্যেই ৯ উইকেট হারিয়ে বসে ক্যারিবীয়রা। শেষ উইকেটে অ্যান্ডারসন ফিলিপস এবং জাইডেন সিলস ৩৯ রান যোগ করলে স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ১৪৯। এটাই ছিল তাদের পুরো ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের জুটি।
বাংলাদেশের বোলিং প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত প্রশংসা কুড়িয়েছিল। শরিফুল ইসলাম উইকেট নেয়ার ক্ষেত্রে (৪টি) অগ্রগামি হলেও মোস্তাফিজুর রহমানই প্রথম ব্রেক থ্রুটা এনি দিয়েছিলেন। তিনি ফিরিয়ে দেন সাই হোপকে। বাংলাদেশের বিপক্ষে যার ব্যাটিং গড় ৯০ এর ওপর।
তাসকিন আহমেদ উইকেট নিতে না পারলেও দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন। মেহেদী হাসান মিরাজ তো বর্তমান সময়ের অনেক উঁচুমানের একজন অফ স্পিনার। ৩ উইকেট নিয়ে তার আরও একবার প্রমাণ দিলেন। নাসুম আহমেদ অভিষেকে দারুণ প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ৮ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৬ রান। সবচেয়ে বড় কথা ৪০টি ডট বল দিয়েছেন তিনি। তার বল থেকে রানই করতে পারেনি ক্যারিবীয় বোলাররা।
সুতরাং, বাংলাদেশ যে দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও ফেবারিট, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না এবং সেই আস্থা এবং বিশ্বাস ধরে রেখে সিরিজ জিতেই মাঠ ছাড়তে চান তামিম ইকবাল অ্যান্ড কোং।