নির্বাচনে কেউ তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে তা প্রতিরোধ করতে রাইফেল নিয়ে দাঁড়াতে হবে- এমন বক্তব্য দেওয়ায় এবার ক্ষমা চাইলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, আমরা কখনো কখনো ভুল করে ফেলি।
এজন্য আমি অনুতপ্ত।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমি হয়তো অল্প শিক্ষিত, অল্প শিক্ষিত মানুষও এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। ববি হাজ্জাজের কথার পিটে হেসে বললাম বন্দুক নিয়ে দাঁড়াবেন। এটা হচ্ছে কথার পিঠে কথা। এটা কখনোই সিইসি মিন করতে পারে না। যদি মিন করতে পারতাম তবে আমি প্রতিনিয়ত বলতাম আপনারা অস্ত্র সংগ্রহ করুন। আপনারা নিজেদের শক্তিশালী করুন। আমরা অনেক সময় হিউমার বা কৌতুক করে ফেলি।
তিনি বলেন, আমরা মিডিয়ার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। যতগুলো আলোচনা করেছি, আমরা কোনো রাখঢাক করিনি। আমাদের কথা ও ছবি বাইরে স্ক্রিন দেওয়া আছে, সেখানে যায়। এখন আমাদের সাংবাদিকরা কেন এটা করলেন, বুঝে নাকি না বুঝে! আমার শ্রদ্ধা তাদের প্রতি এখনো আছে। কিন্তু এটা করে আমার মর্যাদাটা একেবারেই ক্ষুণ্ন করে দেওয়া হয়েছে।
সিইসি বলেন, আপনারা বিষয়টি বিশ্বাস করছেন, আমার বাবা বেঁচে থাকলেও বিশ্বাস করতেন যে আমার ছেলে এমন বাজে পরামর্শ দিল কেন! আমার মাও বলতেন বাবা এত খারাপ পরামর্শ দিলে কেন? আমি এজন্য বলবো কখনো কখনো আমরা ভুল করে থাকি, এজন্য আমি অনুতপ্ত। আমি হিউমার করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এটাকে যদি ওইভাবে প্রচার না করে বস্তুনিষ্ঠভাবে বলা হতো হিউমার করেছেন। আমি এটা মিন করিনি। এজন্য আমাকে ক্ষমা করবেন।
তিনি বলেন, আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। আমরা সৎ, আমার সহকর্মীরা আছেন। সবাই কঠোর অবস্থানে আছেন। সবাই সৎ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমরা সর্বাত্মভাবে সে চেষ্টা করবো।
দলগুলোর উদ্দেশে সিইসি বলেন, আপনারা নির্বাচন করবেন। সিইসি হিসেবে অনুরোধ করবো আপনারাও আন্তদলীয় সংলাপ করেন, মিটিং করেন। কিছু কিছু প্রশ্নে মোটাদাগে ঐক্যমতে পৌঁছার চেষ্টার করেন। কারণ এটা কিন্তু বড় ধরনের সমস্যা। অর্থশক্তি, পেশিশক্তির যে কথা আসছে। সেটা চট করে সমাধান করা সমঝোতা না থাকলে ইসির পক্ষে একা কষ্টসাধ্য হতে পারে। সেজন্য আপনাদের সহায়তা কামনা করছি।
আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। আইন অনুসরণ করতে আমরা বাধ্য। সরকারের সীমা কতটুকু হবে, সেগুলো নিয়ে সরকারের কাছে উপস্থাপন করুন। আমি দ্বিমত-একমত পোষণ করছি না। আমরা চাই সুন্দর নির্বাচন। সবদেশেই নির্বাচনকালীন সরকার রুটিন ওয়ার্ক করে। বর্তমান সরকার যারা আছেন, তারা রুটিন ওয়ার্ক করতে পারেন। উনাদের আমরা বাধ্য করতে পারবো না।
সংলাপে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এতে সিইসির সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনাসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন।
সকালে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সঙ্গে বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু দলটি আসবে না বলে জানিয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ মুসলিম লীগও সংলাপে অংশ নেয়নি। এ পর্যন্ত আটটি দলের সঙ্গে সংলাপ সম্পন্ন করেছে ইসি। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত অন্য ২৯টি দলের সঙ্গেও বসার কথা রয়েছে ইসির।