রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের তেহরান সফরের একই সময়ে ইরানের তেল মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির তেল শিল্পের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিদেশি বিনিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইরানের তেল ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব বার্তা সংস্থা ‘শানা’ জানিয়েছে, ইরানের জাতীয় তেল কোম্পানি ও রাশিয়ার জ্বালানী প্রতিষ্ঠান গ্যাসপ্রমের মধ্যে প্রায় ৪০ বিলিয়ন [চার হাজার কোটি] ডলারের ‘কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
চুক্তিটি ভার্চুয়ালি সই হয়েছে বলেও জানিয়েছে শানা। সিরিয়া বিষয়ক আস্তানা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে পুতিন মঙ্গলবার তেহরান সফরে আসেন এবং ওই সম্মেলনে যোগ দেয়া ছাড়াও তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট ও সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে আলাদা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেন সামরিক অভিযান শুরু করার পর এই প্রথম পুতিন বিদেশ সফরে এলেন। তিনি এমন সময় এ সফর করলেন যখন গত পাঁচ মাসে রাশিয়া মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলোর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে।
রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, দেশটির ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে তেহরানের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে ‘বিশেষ গুরুত্ব’ দিচ্ছে মস্কো। ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ‘ইরনা’ রাশিয়ার সঙ্গে তেল চুক্তিকে ইরানের ইতিহাসের বৃহত্তম বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের চুক্তি বলে বর্ণনা করেছে।
ইরানের জাতীয় তেল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসেন খুজাস্তে মেহর বলেছেন, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে; কাজেই [প্রমাণিত হয়েছে] বিশ্ব বাজার থেকে ইরানের তেলকে আলাদা করে ফেলা সম্ভব নয়।তিনি বলেন, ইরানের তেলের ওপর বিশ্ব নির্ভরশীল এবং এ কারণে ইরান বিশ্ব বাজারে তেল সরবরাহের একটি স্থিতিশীল ও নিরাপদ দেশে পরিণত হয়েছে।
তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশে গত সপ্তাহে গ্যাসপ্রমের কর্মকর্তারা ইরান সফর করে গেছেন এবং তখনই ৪০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। খুজাস্তে মেহর বলেন, এর আগে রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের তেল খাতের উন্নয়নের জন্য ৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই হয়েছিল বর্তমানে যার বাস্তবায়ন চলছে।