মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রচেষ্টাকে গতিশীল করতেই ওই অঙ্গরাজ্যের মেয়র সেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। গত তিন দিনের ব্যবধানে এ নিয়ে দেশটির দুই অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। এপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ায় জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করে দেশটির নিউইয়র্ক সিটি। শহরটিকে মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাবের ‘এপিসেন্টার’ বা ‘উপকেন্দ্র’ বলে উল্লেখ করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সতর্কতা জারির ফলে নগর কর্মকর্তারা স্থানীয় স্বাস্থ্য কোডের অধীনে জরুরি আদেশ জারি করতে এবং বিস্তারের গতি কমাতে প্রয়োজনীয় যেকোনো ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি পাবেন। নিউইয়র্ক সিটিতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এদিকে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম বলেছেন, সরকারি ভাবে যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তা গতিশীল করতে, আরও বেশি ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা এবং লোকজন যেন সহজেই চিকিত্সা ও ভ্যাকসিন পেতে পারেন সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন আরও সহজলভ্য করতে, সচেতনা বাড়াতে এবং ঝুঁকি কমিয়ে আনতে আমরা ফেডারেল সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাব। ক্যালিফোর্নিয়ায় এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সের প্রায় ৮শ কেস শনাক্ত হয়েছে বলে রাজ্যের গণস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি এক বিশেষ ধরনের বসন্ত। জলবসন্ত বা গুটিবসন্তের প্রতিকার থাকলেও এই ভাইরাস এতই বিরল যে, এখনো পর্যন্ত এর নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসাপদ্ধতি জানা নেই চিকিৎসকদের। মূলত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার কিছু দেশে এই ভাইরাসের খোঁজ মেলে। তবে নাম ‘মাঙ্কিপক্স’ হলেও একাধিক বন্যপ্রাণির মাধ্যমে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস। এই ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়ায় ইঁদুরের মাধ্যমে।
মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তদের শরীরে প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে আছে- জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, পিঠ ও গায়ে ব্যথার মতো লক্ষণ। এর থেকে হতে পারে কাঁপুনি ও ক্লান্তি।
এর পাশাপাশি দেহের বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠে। সঙ্গে ছোট ছোট ক্ষতচিহ্ন দেখা দিতে থাকে মুখে। ধীরে ধীরে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ক্ষত। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আক্রান্ত ব্যক্তির আশেপাশে থাকা ব্যক্তির মধ্যে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস।
শ্বাসনালি, ক্ষতস্থান, নাক, মুখ কিংবা চোখের মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। এমনকি আক্রান্তের ব্যবহার করা পোশাক থেকেও ছড়ায় সংক্রমণ।