1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ পূর্বাহ্ন

বেহেশতের উচ্চস্থান লাভের নিশ্চয়তা

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০২২

মহানবী (সা.)-এর সাহাবিরা জানতেন নামাজ সর্বোত্তম ইবাদত। তাঁরা জানতেন রোজা ও দান-সদকা শ্রেষ্ঠ ফজিলতের কাজ। তাই রসুলুল্লাহ (সা.) তাঁদের বললেন, ‘আমি কি তোমাদের নামাজ, রোজা ও দান-সদকা অপেক্ষা উচ্চ ফজিলতপূর্ণ মহৎ কাজের সুসংবাদ দেব না? তাঁরা বললেন, অবশ্যই! তিনি বললেন, পরস্পর মীমাংসা ও সন্ধিমূলক আচরণ হলো নামাজ, রোজা ও দান-সদকা থেকেও উচ্চমানের আমল। কেননা ঝগড়া-বিবাদ এবং বিচ্ছেদপূর্ণ আচরণ ও কলুষতা ধ্বংস টেনে আনে।’ (আহমদ, তিরমিজি, আবু দাউদ) বিবাদ-বিচ্ছেদ ও যুদ্ধবিগ্রহ মূলত শয়তানি। ইসলাম ঝগড়া-বিবাদ ও কলুষতার সমর্থন দেয় না। সাম্য, মানবতা ও উদারতার প্রতীক এ ধর্ম। সুশৃঙ্খল ও সৌভ্রাতৃত্বপূর্ণ আচরণের শিক্ষা দিয়েছে ইসলাম। ঝগড়া-বিবাদ ও বিচ্ছেদপূর্ণ নীতি অসামাজিক। এর ফলে পারিবারিক ও সামাজিক সংহতি, ঐক্য, সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন হয়। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ জীবনে নেমে আসে অশান্তির কালো ছায়া। বাড়াবাড়ির ফলে বিস্তার ঘটে হানাহানি, খুন, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির। ছড়াছড়ি হয় অনৈতিক আচরণ ও অশ্লীল কথার্বাতার মতো জঘন্যতম অপরাধের। অশ্লীল ভাষা ব্যবহারকারীকে রসুলুল্লাহ (সা.) মোনাফেক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ন্যায়সংগত কারণেও ঝগড়া -বিবাদ, যুদ্ধবিগ্রহ বর্জন করার প্রতি মহানবী (সা.) উৎসাহিত করেছেন। সাহাবি আবু উমামা আল বাহেলি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি ওই ব্যক্তির জন্য বেহেশতের প্রাণকেন্দ্রে ঘরের জিম্মাদার, যে ন্যায্য অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও বিবাদ থেকে বিরত থাকে। আমি ওই ব্যক্তির জন্য বেহেশতের মধ্যস্থানে ঘরের জিম্মাদার, যে কৌতূহল অবস্থায়ও মিথ্যা বর্জন করে। আমি ওই ব্যক্তির জন্য বেহেশতের সর্বোচ্চ স্থানে ঘরের জিম্মাদার, যার আচরণ হবে উত্তম।’ (আবু দাউদ) আমিরুল মোমিনিন আলী (রা.) বলেছেন, ‘তোমাদের উচিত বিবাদ ও মতভেদ পরিহার করা। কেননা তা ভ্রাতৃত্বের অন্তর ব্যাধিগ্রস্ত করে এবং মোনাফেকি ও কপটতার সৃষ্টি করে।’ (উসুলে কাফি) দুঃখজনক হলো, বর্তমানে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, দেশ ও বিশ্বব্যাপী যুদ্ধংদেহী মনোভাব বিস্তার করছে। যারা শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করবে তারা ব্যস্ত যুদ্ধের সাজে। সবাই জয়-পরাজয়ের প্রতিযোগিতা ও হিংসা-বিদ্বেষ-হানাহানিতে লিপ্ত। যাদের দায়িত্ব ছিল বিপদে সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করা, তারাই আজ মানুষ নিধনের সামগ্রী প্রস্তুত করছে। মানুষ মারার ষড়যন্ত্র যেভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে মানুষ বাঁচানোর চিন্তা সেভাবে কেউ করছে না। ফলে গোটা বিশ্বের মানুষ আজ বহুমুখী সংকটের সম্মুখীন। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি ও যুদ্ধবিগ্রহের অমানবিকতায় পিষ্ট হচ্ছে গোটা বিশ্ব। ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নানামুখী সংকটে হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত নিঃস্ব হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। যুদ্ধপ্রেমীদের রোষানলে ধুঁকছে অসহায় মানুষ। গোটা পৃথিবী প্রভাবিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। বিশ্ববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুতে জোগান সংকট তীব্র হচ্ছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত চাহিদা মুদ্রাস্ফীতিসহ বিভিন্নমুখী দুর্ভোগ তৈরি করছে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও দেশে দেশে সৃষ্টি হচ্ছে কৃত্রিম সংকট, অনাকাক্সিক্ষত দুর্ভিক্ষ। তাই আমাদের উদার নীতি অবলম্বন করতে হবে। শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে হবে। পরিহার করতে হবে সব ধরনের ন্যক্কারজনক বাড়াবাড়ি ও মানুষ হত্যার অমানবিক ষড়যন্ত্র।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি