অধিনায়ক সাকিবের সঙ্গে কোচ শ্রীরামের একটা বোঝাপড়া হয়ে গেছে এ ক’দিনে। এশিয়া কাপে ক্রিকেটারদের স্বাধীনতা দিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখতে চান দু’জনই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে নতুন পরিকল্পনা ভালোভাবে কাজ করলে সেটাকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন তাঁরা। কোচ ও অধিনায়কের চিন্তাধারায় মিল থাকলে দল পরিচালনা করা সহজ হয়ে যায়। ক্রিকেটারদের কাছে থেকে পারফরম্যান্স আদায় করে নেওয়ার সুযোগও বেশি থাকে। কীভাবে সেটা করতে হয়, তা ভালো করেই জানা সাকিবের। কোচ শ্রীরামও প্রায় এক দশকের কোচিং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে টি২০ দলটাকে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন এশিয়া কাপ দিয়ে। সাকিবের ছকেই আপাতত থাকছেন তিনি।
টি২০ দলের নেতৃত্বে সাকিবের তৃতীয় হলেও কোচ শ্রীরামের প্রথম মিশন। গত এক সপ্তাহে খেলোয়াড়দের হয়তো খুব ভালোভাবে বুঝেও উঠেতে পারেননি। এশিয়া কাপে তাই সাকিবের ওপরই পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে কোচকে। সাকিবও কোচের প্রতি সম্মান রেখে সমন্বিত পরিকল্পনা নেওয়ার চেষ্টা করছেন প্রথম থেকেই। একাদশ বেছে নিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মিটিং হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের। রাসেল ডমিঙ্গোর মতো গতানুগতিক একাদশ খেলানোর পক্ষে নন সাকিব। প্রতিপক্ষ বিবেচনায় নিয়ে ব্যাটিং ও বোলিং লাইনআপ সাজাবেন তিনি।
বিশেষ করে আফগানিস্তানের বোলিংয়ের শক্তির জায়গা স্পিন হওয়ায় টপঅর্ডার ব্যাটিংয়েও কিছুটা নতুনত্ব দেখা যেতে পারে। প্রথমে কথা ছিল মোহাম্মদ নবি, রশিদ খান, মুজিবুর রহমানদের মোকাবিলা করতে মুশফিকুর রহিমকে দিয়ে ব্যাটিং ওপেন করানো হবে। শেষ মুহূর্তে নাঈম শেখ স্কোয়াডে যোগ হওয়ায় নিয়মিত ওপেনারই খেলানো হতে পারে। এক কথায়, ব্যাটিং অর্ডারে নতুনত্ব দেখা গেলেও যেতে পারে। অধিনায়ক তাই মাহমুদউল্লাহদের ছায়া থেকে বেরিয়ে আস্থা রাখতে পারে তরুণদের ওপর। কারণ, বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার নেতৃত্বে ফেরার পরই সমর্থকদের প্রত্যাশার লাগাম টেনে দিয়েছেন। এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে ফাইনালে তোলার স্বপ্ন দেখাননি তিনি। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার অদম্য ইচ্ছা কাজ করছে অধিনায়কের ভেতরে। প্রথম অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলনেও সেটা বলেছেন তিনি। প্রত্যাশার লাগাম টেনে রাখতে দুবাই পৌঁছানোর পর একবারও মিডিয়ার মুখোমুখি হননি অধিনায়ক। গতকাল এশিয়া কাপের অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলনেও কোচ ছিলেন দলের মুখপাত্র।
সাকিবের এই কৌশল খুবই ভালো লেগেছে শ্রীরামের। তিনি মনে করেন, বিশ্বের অন্যতম সেরা এ অলরাউন্ডারের হাত ধরে ভালো কিছুই হবে এশিয়া কাপে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, আফগানদের মোকাবিলা করতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শ্রীরাম বলেন, ‘আফগানিস্তান খুবই বিপজ্জনক একটি দল। তারা শুধু রশিদ খানের ওপর নির্ভর করে না। সে বিশ্বের জনপ্রিয় একজন টি২০ বোলার, এটা অস্বীকার করব না। তবে আমরা প্রস্তুত হয়েছি আফগানিস্তান দলের জন্য। রশিদ, নবি, ফজল, ফারুকি কোনো ম্যাটার করে না। কারণ, আমরা আফগানিস্তানের জন্য প্রস্তুত হয়েছি দল হিসেবে।’
বাংলাদেশ দল এক সপ্তাহ আগে দুবাই গেলেও ম্যাচ ভেন্যু শারজাহ যায়নি একদিনও। সেখানে অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় দুবাইয়েই ক্যাম্প হয়েছে বলে জানান কোচ। গত সাত দিনে যে চারটি অনুশীলন সেশন হয়েছে, সেখানে ব্যাটারদের রোল অনুযায়ী ফোকাস করার স্বাধীনতা দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী যে কৌশল প্রয়োগ করা হবে আজ আফগানদের বিপক্ষে।