আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে এবার কিছু পরিবর্তন আনা হতে পারে। এক্ষেত্রে কিছু কিছু আসনে ২০১৩ সালে আনা সীমানায় পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ নিয়ে পরবর্তী নূরুল হুদা কমিশনও তাঁর পূর্বসূরিদের সমালোচনা করেন। গত ফেব্রুয়ারিতে বিদায় নেওয়ার আগে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা এ নিয়ে বলেছিলেন, সীমানা পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভৌগলিক অখণ্ডতা, প্রশাসনিক সুবিধা আমলে নেওয়া হয়নি। ফলে অনেকেই এসে কান্নাকাটি করেন, অভিশাপ দেন।
এই অবস্থায় বর্তমান কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন ভাবছে প্রশাসনিক অসুবিধা ও ভৌগলিক অখণ্ডতাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার কথা। এক্ষেত্রে একটি আসনের কোনো অংশ যদি অন্য উপজেলা বা অন্য জেলায় যুক্ত হয়ে থাকে, তবে এবার তা বাদ দেওয়া হতে পারে। এছাড়া গত কয়েক বছরে নতুন নতুন স্থানীয় সরকার সৃষ্টি হয়েছে। নদী ভাঙনের কারণেও ভৌগলিক চিত্র পাল্টে গেছে। এসব ক্ষেত্রে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আবার জনসংখ্যা কোথাও অনেক বেড়ে থাকলে সেখানেও কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ব্যাপক পরিবর্তন হবে কি হবে না, তার কোনোটাই বলতে পারবো না। আইনে যে ক্রাইটেরিয়া আছে, সেভাবেই হবে। আইনে তিনটি কথাই বলা হয়েছে।
জনসংখ্যাই যদি ঢাকায় বেড়ে থাকে তবে আসন বাড়বে। এর সঙ্গে ভৌগলিক বিষয় ও প্রশাসনিক বিষয়টাও আসবে। যেমন মনে করেন- একটা আসন এমন দেওয়া যাবে না, যে দুইটা জেলার মধ্যে পড়ে যায়। একটা আসনের কিছু অংশ অন্য উপজেলায় যেন না পড়ে, এতে কিন্তু প্রশাসনিক অখণ্ডতা রক্ষা হলো না। আমরা এগুলো দেখবো। এটার দাবি আছে। অনেকেই মুখে মুখে এই দাবি করেছেন। তবে এই দাবি লিখিতভাবে হতে হবে। তখন আমরা দেখবো।
সর্বশেষ ২৫টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন করা হয়েছিল। সীমানায় পরিবর্তন আনা আসনগুলো-নীলফামারী- ৩ ও ৪, রংপুর- ১ ও ৩, কুড়িগ্রাম- ৩ ও ৪. সিরাজগঞ্জ- ১ ও ২, খুলনা- ৩ ও ৪, জামালপুর- ৪ ও ৫, নারায়ণগঞ্জ- ৪ ও ৫, সিলেট- ২ ও ৩, মৌলভীবাজার- ২ ও ৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৫ ও ৬, কুমিল্লা- ৬, ৯ ও ১০ এবং নোয়াখালী- ৪ ও ৫।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আইন অনুযায়ী, এবার সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্ধিারণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কেননা, আদশ শুমারির প্রতিবেদন ইতোমধ্যে প্রকাশ হয়েছে।
সম্প্রতি সব জেলা প্রশাসকদের কাছে সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য প্রশাসনিক সীমানার তথ্য জানতে চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন। জেলা প্রশাসকরা একে একে সেই তথ্য পাঠাচ্ছেন। তবে সবাই এখনো পাঠাননি বলে জানা গেছে।