প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ভারত সবসময়ই প্রতিবেশী দেশটির উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা চায়।
নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত ও প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বন্ধুপ্রতিম ভারত সবসময়ই বাংলাদেশের উন্নয়ন চায়। বাংলাদেশ ভারতের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী এবং চতুর্থ রপ্তানি বাজার। তাই বাংলাদেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা সবসময়ই চায় ভারত।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়নের সাক্ষী হয়েছে। ঢাকা এই অঞ্চলে দিল্লির সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং আমাদের শক্তিশালী সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। গত কয়েক বছরে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমি বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের কোভিড মহামারি, সাম্প্রতিক বৈশ্বিক ঘটনাপ্রবাহ থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে।’
যৌথ নদী নিয়ে মোদি বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সীমান্ত দিয়ে ৫৪টি নদী প্রবাহিত হয়। এসব নদী উভয় দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে যুক্ত। আজ আমরা কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।’
তিনি বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য দ্রুত বাড়ছে। আমরা আইটি, মহাকাশ এবং পারমাণবিক খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নিয়েও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।’
সেপার ঘোষণা মোদির
নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট বা সেপা) সইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজার ভারতের। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমরা বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী৷ সে জন্য দুই দেশের মধ্যে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা) সই করার লক্ষ্যে আমরা আজ থেকে কার্যক্রম শুরু করতে একমত হয়েছি। সেপা চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা পাবে। ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে আরও গতি আসবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার; আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদারও। আমরা একযোগে আগামী দিনে আরও এগিয়ে যেতে চাই।
‘কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আমরা একযোগে কাজ করেছি; সফলও হয়েছি। আগামীতে পরমাণু, তথ্যপ্রযুক্তি, যোগাযোগ ইত্যাদি খাতে আমরা একযোগে কাজ করব। আগামী ২৫ বছরে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের আগামী দিনের সম্পর্ক নিয়ে মোদি বলেন, ‘আজ প্রধানমন্ত্রীর সফর আমাদের স্বাধীনতার মহোৎসবের মধ্যে হচ্ছে। আমার পুরো বিশ্বাস আছে, আগামী ২৫ বছরে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্কেরও নিরন্তর উন্নতি হচ্ছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমি সব দ্বিপক্ষীয় ক্ষেত্রে এবং দুই দেশের বিভিন্ন বিষয়ে অনেক আলোচনা করেছি।’