ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর নতুন রাজা তৃতীয় চার্লস জাতির উদ্দেশে তার প্রথম ভাষণ দিয়েছেন। এতে তিনি সম্মান, সমমর্যাদা ও ভালোবাসার মাধ্যমে ব্রিটেন ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর জনগণের সেবা করার অঙ্গীকার করেছেন।
ব্রিটিশ জাতি ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর উদ্দেশে বাকিংহ্যাম প্যালেস থেকে দেয়া ভাষণটি বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় সম্প্রচার করা হয়।
রানির শাসনামলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রানির মতোই আমিও জাতির হৃদয়ে সাংবিধানিক নীতিগুলো অক্ষুণ্ন রাখব।’
স্কটল্যান্ডের বালমোরার দুর্গে বৃহস্পতিবার ৯৬ বছর বয়সে মারা যান রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। অবসান ঘটে ৭০ বছরের এক অনন্য শাসনের। রানির মৃত্যুর পর রীতি অনুযায়ী, সিংহাসনে আসেন তার ছেলে তৃতীয় চার্লস।
প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রেরণা এবং উদাহরণ ছিলেন বলে জানান রাজা চার্লস।
তিনি বলেন, ‘আজ অনেক কষ্ট বুকে নিয়ে আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি।
‘সারাটা জীবন ধরেই মহামান্য রানি… আমার প্রিয় মা…আমার এবং আমার গোটা পরিবারের জন্য অনুপ্রেরণা এবং উদাহরণ ছিলেন। আমরা তার কাছে আন্তরিক ঋণী। যেকোনো পরিবার তাদের মায়ের কাছে ঋণী হতে পারে; তার ভালোবাসা, স্নেহ, বোঝাপড়া এবং পথনির্দেশনার জন্য।
‘রানি এলিজাবেথ দারুণ একটা জীবন পার করেছেন। লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত।’
১৯৪৭ সাল রানির করা প্রতিশ্রুতি তার পুরো জীবনকে সংজ্ঞায়িত করেছিল বলে জানান রাজা চার্লস। তিনি বলেন, ‘গোটা পরিবার আজ শোকাচ্ছন্ন। যুক্তরাজ্যের অনেক মানুষের সঙ্গে আমরা তা ভাগ করেছি। ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রানি হিসেবে আমার মা বহু জাতির মানুষের সেবা করেছেন।’
‘কেপটাউন থেকে ১৯৪৭ সালে ২১তম জন্মদিনে কমনওয়েলথের একটি সম্প্রচারে মা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি তার জীবন নিজের জনগণের সেবায় কাটিয়ে দেবেন। এটি প্রতিশ্রুতির চেয়েও বেশি কিছু ছিল, এটি একটি গভীর ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতি, যা তার পুরো জীবনকে সংজ্ঞায়িত করেছিল।’
রাজা জানান, মানুষের মধ্যে সব সময় ভালো কিছু দেখার অদম্য এক ক্ষমতা ছিল রানি এলিজাবেথের। তার প্রতিফল নিজের মধ্যে ধারণ করেছেন তিনি।
‘তার মধ্যে অটুট ভালোবাসা, সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়, যা আমাদের জাতি হিসেবে মহান করে তুলেছে। তার শাসনে ছিল স্নেহ, প্রশংসা ও শ্রদ্ধা। এগুলো রাজত্বের বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে।’
এ সময় স্ত্রী ক্যামিলার প্রশংসা করেন রাজা চার্লস। জানান, কুইন কনসোর্ট ক্যামিলার প্রেম তাকে প্রেরণা দেয়।