রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের শি জিনপিং বৃহস্পতিবার থেকে প্রাচীন সিল্ক রোড নগরী সমরখন্দে অন্যান্য এশীয় নেতাদের সাথে পশ্চিমা বৈশ্বিক প্রভাব মোকাবেলায় চ্যালেঞ্জ হিসাবে একটি আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলনে জড়ো হচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার উজবেক শহরে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) বৈঠকে শি এবং পুতিনের সাথে ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, ইরান এবং আরও কয়েকটি দেশের নেতারা যোগ দেবেন।
প্রধান শীর্ষ সম্মেলনের দিন শুক্রবার, তবে এটি বৃহস্পতিবার রাশিয়ান এবং চীনা নেতাদের একটি বৈঠক যা সবচেয়ে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
পুতিনের জন্য শীর্ষ সম্মেলনটি দেখানোর একটি সুযোগ যে রাশিয়াকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। এমন সময় এই সম্মেলন হচ্ছে যখন মস্কোর বাহিনী ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে বড় ধরনের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।
অক্টোবরে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ কংগ্রেসের আগে বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে তার সক্ষমতার প্রমাণ তুলে ধরার ব্যাপারে শি’র জন্য এই সম্মেলন একটি সুযোগ। করোনাভাইরাস মহামারীর প্রথম দিনগুলোর পর শি’র এটি প্রথম বিদেশ সফর।
উভয় নেতার জন্য শীর্ষ সম্মেলনটি পশ্চিমের, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর একটি সুযোগ করে দেবে। ইউক্রেনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সম্প্রতি তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রদর্শন বেইজিংকে ক্ষুব্ধ করেছে।
ক্রেমলিনের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ এই সপ্তাহে মস্কোতে সাংবাদিকদের বলেছেন ‘এসসিও পশ্চিমা-কেন্দ্রিক সংস্থাগুলির একটি বাস্তব বিকল্প প্রস্তাব।’
তিনি বলেন, ‘এসসিও’র সকল সদস্য একটি ন্যায়সঙ্গত বিশ্বব্যবস্থার পক্ষে দাঁড়িঁয়েছে।’ তিনি বলেন, এই শীর্ষ সম্মেলন ‘বড় আকারের ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের পটভূমিতে’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
চীন এবং ইউরোপের মধ্যে সিল্ক রোড বাণিজ্য রুটের অন্যতম কেন্দ্রস্থল সমরখন্দ, একটি বিশাল টালিযুক্ত মসজিদের শহর। শীর্ষ সম্মেলনের আগের দিনগুলিতে এখানে চলাচল সীমিত করা হয় এবং এর বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বুধবার এএফপি সাংবাদিকরা পরিদর্শন করার সময় রাস্তা এবং এমনকি এর বিখ্যাত বাজারগুলি অনেকাংশে খালি ছিল এবং সম্মেলনের দুই দিনের জন্য স্কুলগুলি বন্ধ রাখা হচ্ছে।
শহর জুড়ে নিরাপত্তা কঠোর ছিল, রাস্তায় ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতি এবং সাঁজোয়া যানগুলি শহরের কেন্দ্রস্থলে পার্ক করে রাখা হয়েছে।
চীন, রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান এবং প্রাক্তন সোভিয়েত মধ্য এশিয়ার দেশগুলি-কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান এবং তাজিকিস্তানের নিয়ে এসসিও গঠিত – ২০০১ সালে পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য একটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা সংস্থা হিসাবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷
এটি ন্যাটোর মতো আনুষ্ঠানিক সামরিক জোট নয় বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো গভীরভাবে সমন্বিত ব্লক নয়, তবে এর সদস্যরা যৌথ নিরাপত্তা সমস্যা মোকাবেলা করতে, সামরিকভাবে সহযোগিতা করতে এবং বাণিজ্যকে উন্নীত করতে একসঙ্গে কাজ করে।