মিয়ানমারে বিক্ষোভ চলার মধ্যে প্রথম টিভি ভাষণে নতুন করে অভ্যুত্থানের সাফাই গেয়ে ফের নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সামরিক নেতা জেনারেল মিন অং হ্লাইং।
গত নভেম্বরের নির্বাচন সুষ্ঠু ছিল না উল্লেখ করে সোমবার তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন জান্তা আবার নতুন করে নির্বাচন দেবে এবং বিজয়ীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেবে।
মিয়ানমারে নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত সপ্তাহে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করা সেনাবাহিনীর নিন্দা-প্রতিবাদে মুখর হয়ে দেশজুড়ে শহরে-নগরে মানুষ বিক্ষোভে নেমেছে। রাস্তায় রাস্তায় সোমবার তৃতীয়দিনের মতো বিক্ষোভ করছে জনতা।
নির্বাচনে জয়লাভ করা ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চি এখনও বন্দি। তার মুক্তিরও দাবি জানাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ তাদের আন্দোলন স্তব্ধ করে দিতে খড়গহস্ত হয়েছে। তাদেরকে আন্দোলন ছেড়ে চলে যাওয়া নয়ত কঠোর শাস্তির মুখে পড়ার হুমকি দিচ্ছে পুলিশ।
এ পরিস্থিতির মধ্যে সোমবারের ভাষণে আগের অবস্থানই জানান দিয়েছেন জেনারেল মিন অং হ্লাইং। অভ্যুত্থানের পর প্রথম মুখ খুলেই হ্লাইং এর সাফাই গেয়ে নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এবারও অনেকটা একই সুরে তিনি অভ্যুত্থান কেন ঘটানো হল সে ব্যাখ্যাই দিয়েছেন বেশি। নভেম্বরের নির্বাচনে ভোটার তালিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশন তদন্তে ব্যর্থ হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন এবং করোনাভাইরাসের অজুহাতে কমিশন সুষ্ঠু প্রচার চালাতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন।
নতুন নির্বাচন তদারকির জন্য একটি ‘নতুন নির্বাচন কমিশন’ গঠন করা হবে বলেও ভাষণে জানিয়েছেন জেনারেল হ্লাইং। তিনি বলেন, জান্তা একটি ‘সত্যিকারের এবং নিয়মানুবর্তী গণতন্ত্র’ গড়ে তুলবে; যা আগের যুগের সামরিক শাসন থেকে ভিন্ন ধরনের হবে।
দেশের নাগরিকদেরকে নিজেদের ভাবাবেগের ঊর্ধ্বে উঠে বাস্তব সত্যকে উপলব্ধি করে চলারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বিক্ষোভকারীদেরকে সরাসরি কোনও হুমকি না দিলেও হ্লাইং বলেছেন,কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়।
জেনারেলের এই ভাষণের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছে জনগণের কাছ থেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, মানুষজন টেলিভিশনের পর্দার সামনে হাড়ি-পাতিল বাজিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।