সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হলেও শেষ পর্যন্ত তা টেকেনি। উত্থানের বদলে পতন দিয়ে শেষ হয়েছে দিনের লেনদেন। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি বড় হয়েছে দরপতনের তালিকা।
তবে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক বেড়েছে। একই সঙ্গে দাম কমার থেকে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি দুই বাজারেই বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
অবশ্য গত কয়েকদিনের মতো দুই বাজারেই দাম বাড়া বা কমার তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাই বেশি। দাম অপরিবর্তিত থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা) আটকে রয়েছে। ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীরা ক্রেতার অভাবে তাদের কাছে থাকা শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই উত্থান প্রবণতা অব্যাহত থাকে লেনদেনের প্রথম আড়াই ঘণ্টা। এতে আড়াই ঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ২২ পয়েন্ট।
তবে শেষ এক ঘণ্টার ৫০ মিনিটের লেনদেনে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় নাম লেখায়। এতে দেখতে দেখতে ঋণাত্মক হয়ে পড়ে সূচক এবং ডিএসইর সবকটি সূচক ঋণাত্মক হয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৬৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৪টির। আর ২২০টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৮৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২৪২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস সবকটি সূচক কমলো।
সবকটি মূল্যসূচক কমার দিনে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ আগের কার্যদিবসের তুলনায় বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৯৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ২৩৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২৫৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
বাজারটিতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বসুন্ধরা পেপার শেয়ার। কোম্পানিটির ১১৯ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের ৯১ কোটি ১০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- নাভানা ফার্মা, ইস্টার্ন হাউজিং, সামিট এলায়েন্স পোর্ট, লুব-রেফ বাংলাদেশ, কেডিএস এক্সসরিজ, ম্যাকসন স্পিনিং এবং ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৩৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৪টির এবং ১২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।