অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের অবদানের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ফায়ার ফাইটাররা দুঃসময়ের বন্ধু।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২২ এর উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।রাজধানীর মিরপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং কমপ্লেক্সে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, নিজের জীবন বাজি রেখে মানুষের কল্যাণ করা, মানুষকে উদ্ধার করা একটা মহৎ কাজে তারা নিয়োজিত রয়েছেন। কাজেই ফায়ার সার্ভিসের প্রতিটি সদস্যই দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবে মানুষের কাছে প্রতীয়মান।
বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময় অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে অংশ নিয়ে জীবন উৎসর্গকারী ফায়ার ফাইটার সোহেল রানা, ফায়ার ফাইটার আব্দুল মতিন, ডুবুরি আব্দুল মতিনসহ সর্বশেষ বিএম কনটেইনার ডিপোর ভয়াবহ আগুনে জীবন উৎসর্গকারী ১৩ জন অগ্নি বীরের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে প্রশিক্ষণ ও জনসচেতনতা বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ পালন করা হয় কয়েকটা লক্ষ্যকে সামনে রেখে। এখানে আমি মনে করি যে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে আমাদের ছেলে-মেয়েদের ছোটবেলা থেকে, প্রত্যেকটা বাড়ির গৃহিণী থেকে শুরু করে সবাইকে আগুন লাগলে কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত করা যায় সে প্রশিক্ষণটা দেওয়া একান্তভাবে দরকার।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ পালন করার জন্য তিনটি নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
১. জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে দুর্যোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা।
২. ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাজে জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়ানো।
৩. ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের মনোবল চাঙা করা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের কল্যাণ ট্রাস্টে আরও ২০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টে আমরা ২০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছি। আমি মনে করি যেহেতু সংখ্যা বেড়ে গেছে আরও ২০ কোটি টাকা এ ট্রাস্টে অনুদান দেব।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের কল্যাণ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের বাস্তবসম্মত উদ্যোগের ফলে এ প্রতিষ্ঠানে যারা কর্মরত তাদের প্রত্যেকেরই মনোবল ও কর্ম সক্ষমতা বেড়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জনবল ৩০ হাজারে উন্নীত করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এবার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহের প্রতিপাদ্য- ‘দুর্ঘটনা দুর্যোগ হ্রাস করি, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ি। ’ প্রধানমন্ত্রী এ প্রতিপাদ্যের প্রশংসা করে বলেন, এটি অত্যন্ত সময়োপযোগী প্রতিপাদ্য হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী।
স্বাগত বক্তব্য দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিভিন্ন সময় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার প্রাপ্ত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যদের হাতে পদক তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।