পাকিস্তান সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া চলতি মাসের শেষের দিকে অবসরে যাচ্ছেন। অবসরে যাওয়ার আগে তার পরিবারের ‘বিপুল সম্পদের তথ্য’ ফাঁস করেছে একটি অনুসন্ধানী নিউজ ওয়েবসাইট।
কর নথির বরাত দিয়ে ওয়েবসাইটটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, সেনাপ্রধানের পরিবার গত ছয় বছরে কয়েক শ কোটি রুপির সম্পদ গড়ে তুলেছে।
ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাপ্রধান বাজওয়ার পরিবারের কর নথি ফাঁসের বিষয়টি সোমবার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এটি আইনে দেওয়া কর তথ্যের সম্পূর্ণ গোপনীয়তার স্পষ্ট লঙ্ঘন। তদন্তে ব্যক্তিগতভাবে নেতৃত্ব দিতে প্রধানমন্ত্রীর রাজস্ববিষয়ক বিশেষ সহকারী তারিক মাহমুদ পাশাকে নির্দেশনা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
অতীতে ফ্যাক্টফোকাস নামে এই ওয়েবসাইট পাকিস্তানের কয়েকজন রাজনীতিক ও অন্যান্য খাতের ‘তহবিল তছরুপ’ নিয়ে বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাদের মধ্যে রয়েছেন—পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান ও সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ।
ফ্যাক্টফোকাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী পাকিস্তান এবং পাকিস্তানের বাইরে মিলিয়ে সেনাপ্রধানের জ্ঞাত সম্পদ ও ব্যবসার পরিমাণ ১ হাজার ২৭০ কোটি রুপি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেনারেল বাজওয়ার পুত্রবধূ মাহনুর সাবিরের ঘোষিত সম্পদের পরিমাণ ২০১৮ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ছিল শূন্য। পরে ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর তা ১ হাজার ২৭১ মিলিয়ন (প্রায় ১২৭ কোটি) রুপিতে গিয়ে দাঁড়ায়। মাহনুরের বোন হামনা নাসিরের সম্পদ ২০১৬ সালে ছিল শূন্য, যা পরের বছর ‘কয়েক শ’ রুপিতে গিয়ে ঠেকে। সেনাপ্রধানের বেয়াই সাবির হামিদের ২০১৩ সালের কর রিটার্ন ছিল ১০ লাখ রুপিরও কম। আসন্ন বছরগুলোতে তিনিও শতকোটি টাকার মালিক হতে যাচ্ছেন বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
ফ্যাক্টফোকাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজওয়ার দুই ছেলের সম্পদের তথ্য পেতে তারা সমর্থ হয়নি। সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, প্রতিবেদনটি প্রকাশ করার পর তাদের ওয়েবসাইটে পাঠকদের প্রবেশ ‘বিঘ্নিত’ হয়। তাদের ওয়েবসাইটটি ‘বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে’ বলেও সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে।