বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও গতিশীল এবং নিরাপদ আছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সকালে যশোর বিমান বাহিনী একাডেমিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমির ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ ২০২২’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন।
বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। জাতির পিতা এই একাডেমিতে একদিন বলেছিলেন— ইনশাল্লাহ এমন দিন আসবে আমাদের একাডেমির নাম শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নয়, সমগ্র দুনিয়াতে সমান অর্জন করবে। আজকে আমরা দেখি অন্যান্য দেশ থেকেও আসছে, ট্রেনিং নিচ্ছে। যেমন নেপাল, ফিলিস্তিন, গাম্বিয়ার অফিসাররা এখানে এসেছেন। ’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার সব সময় বিমান বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণ-আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সেভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু অপারেশন ও প্রশিক্ষণই নয়, আমরা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের জীবনমান উন্নয়নে নানামুখী কল্যাণকর পদক্ষেপও নিয়েছি। আমি চাই, আমাদের ক্যাডেটদের জীবন সুন্দর হোক। ’
প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেন আমাদের ক্যাডেটদের নিয়ে গর্ব করতে পারি। শান্তিরক্ষা মিশনে আমরা কাজ করি, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চলতে হয় তাই প্রশিক্ষণের ওপর সব থেকে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রশিক্ষণ উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করে, এই কথাটা সব সময় মনে রাখতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘যে কোনো একটা যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য জনগণের আস্থা-বিশ্বাস একান্তভাবে দরকার। তাছাড়া আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়—এই নীতিতে আমরা বিশ্বাস করি। তারপরও দক্ষতার দিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের সব ধরনের উৎকর্ষতা বজায় রেখে আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলতে হবে। ’
দেশ ও জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নবীন ক্যাডেটদের শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশ মাতৃকার প্রতি ও দেশের জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। যেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তার ভাষণেও বলেছেন যে, দেশ ও দেশের জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। নবীন যারা আজকে কর্মস্থলে যোগ দেবে তাদের জন্য এই কথাটা প্রযোজ্য।
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক দেশে যখন দুর্ঘটনা-দুর্বিপাক হয়, আমরা তাদের সহযোগিতা করি। আবার আমাদের দেশে ঝড়-বন্যা বা কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটে আমাদের বিমান বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা জনগণের পাশে দাঁড়ান। জনগণের সেবা করেন, এটাই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। ’
এর আগে সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে যশোর আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল সাড়ে ১০টায় যশোর বিমান বাহিনী একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে আসেন তিনি। এ সময় বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রীকে সশস্ত্র সালাম জানান বিমান বাহিনীর চৌকস সদস্যরা। সালাম গ্রহণ শেষে প্রধানমন্ত্রী খোলা জিপে প্যারেড পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ ফ্লাইফাস্ট প্রদর্শন করেন বিমান বাহিনীর সেনারা।