গাজী আনোয়ার হোসেন ( যশোর): অগ্রহায়ণের দ্বিতীয় সপ্তাহে যশোরের বাজারে ব্যাপকহারে আসতে শুরু করেছে শীতের সবজি। জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই কমবেশি সবজি চাষ হয়ে থাকে। তার মধ্যে সদর, মণিরামপুর, বাঘারপাড়া, চৌগাছা , শার্শা উপজেলায় বেশি পরিমাণে সবজি চাষ হয়।
আর এ অঞ্চলের চাষিরা ইতিমধ্যে তাদের উৎপাদিত সবজি বাজারে তুলতে শুরু করায় পাইকারি বাজারে অনেকটাই কমেছে সবজির দাম। যদিও খুচরা বাজারে সেই তুলনায় কমেনি সবজির দাম। দাম স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের। কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। তবে বাড়তি দামেও সয়াবিন ও চিনি মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাকে।
শনিবার সরেজমিনে যশোর শহরের বাবলাতলা, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন ও বেজপাড়া তালতলা মোড়, নাভারণ বাজার , শার্শার বেনাপোল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আবার বাড়তি দামেও মিলছে না চিনি, সয়াবিন তেল, আটা ও ময়দা। সরকারের ওএমএস-এ আটার দাম বাড়ায় বাজারে আরও একদফা বেড়েছে আটার দাম। অবশ্য প্যাকেটজাত আটার দাম আগের মতোই আছে। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদা অনুযায়ী পণ্য দিচ্ছে না। চিনি, তেল, আটা-ময়দা কোন পণ্যই চাহিদা অনুযায়ী পাচ্ছি না। যাও বা পাচ্ছি তাও আবার কোনরকম চালান বা ভাউচার ছাড়া।
বাজারে আসা সরকারি কর্মচারী নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে তেল, চিনি ও আটা-ময়দার দাম বেড়েই চলেছে। চিনি কিনলে তেল কেনার টাকা থাকে না। আবার তেল কিনলে চিনি কেনার পয়সা থাকেনা। এই শীতের সময়েও বাজারে সবজির দাম তেমন একটা কমেনি। দেশি মাছতো চোখেই মেলে না। যাও বা দু-একটা দেখা যায় তার যে দাম তা আমাদের মত লোকেদের পক্ষে কেনা সম্ভব না।
এদিন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২৫-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মূলার দাম ১৫-২০ টাকা, পটল ২০-৩০ টাকা, বেগুন ২৫-৩০ টাকা, বরবটি ৩০-৪৫ টাকা, টমেটো ৬০-৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৩০-৪০ টাকা, ধনিয়াপাতা ৮০-১০০ টাকা, আলু ২৫টাকা, শিম ৪০ টাকা, পেঁপে ১০-১৫ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০-৩৫ টাকা, শসা ৩০-৪০ টাকা, মিচুড়ি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি আঁটি লাল শাক ও পালং শাক ১৫-২০ টাকা করে ও প্রতি পিস লাউ ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জানতে চাইলে বেনাপোলের কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা ও পাইকারী বিক্বরেতা সবুর খান বলেন, পাইকারি বাজারে সবজির দাম কম হলেও পরিবহন খরচের কারণে খুচরা বাজারে তার প্রভাব কমই পড়ছে।
শীতের এই সময়ে খাল বিলে পানি কমার সাথে সাথে বাজারে উঠতে শুরু করে দেশিয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। তবে এ বছর এখনও দেশি মাছের দেখা মিলছে না তেমন একটা। এদিন বাজারে চাষের পাঙ্গাস বিক্রি হয়েছে ১৮০-২২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০-২০০ টাকা, স্বরপুঁটি ২০০-২৫০
টাকা , রুই ২৫০-৪০০ টাকা, মৃগেল ১৮০-২৫০ টাকা, কাতলা ২০০-৩০০ টাকা কেজি। এছাড়াও পুঁটি ২০০-৩০০টাকা, কাঁচকি ৪৮০-৬০০ টাকা, বাটা ১৫০-২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।