‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপের চার বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি। ২০১৪ সালে সবশেষ শিরোপা জয়ী জার্মানরা গত রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল। ফলে কাতার বিশ্বকাপে তাদের সামনে সুযোগ ছিল রাজসিক প্রত্যাবর্তনের। কিন্তু মরুর বুকে বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই অঘটনের শিকার হয় তারা। এশিয়ার দেশ জাপানের কাছে ২-১ গোলে হেরে যায় ম্যানুয়েল ন্যুয়ারের দল।
ফলে বিশ্বকাপে টিকে থাকতে হলে স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচে জয়ের বিকল্প পথ ছিল না তাদের সামনে। আর ড্র করলে শেষ ম্যাচে কোস্টারিকার বিপক্ষে জিততে তো হতোই, সেই সাথে গ্রুপের বাকি দুই দলের দিকে চেয়ে থাকতে হত কোচ হানসি ফ্লিকের দলকে। তবে ২০১০ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের তো হারাতে পারলই না, উল্টো টমাস মুলাররা স্প্যানিশদের সঙ্গে ড্র করে বসল ১-১ গোলের ব্যবধানে। যার ফলে বিশ্বকাপের ‘ই’ গ্রুপের লড়াই জমিয়ে তুলল জার্মানরা।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দোহার আল বায়াত স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই বল নিজেদের দখলে রাখে স্পেন। যার সুবাদে ম্যাচের ৭ মিনিটেই গোলের সুযোগ পায় পায় স্প্যানিশরা। কিন্তু ফরোয়ার্ড ড্যানি ওলমোর শট গোলকিপার ন্যুয়ারের ঠেকিয়ে দিলে স্বস্তি পায় জার্মানরা। মিনিট তিনেক পরে সুযোগ আসে জার্মানির সামনে। স্পেনের রক্ষণ ভেদ করে এগিয়ে গিয়ে ন্যাব্রিকে বল দেন গোরেৎজকা। কিন্তু শটটি ব্লক করে স্প্যানিশ কিপার। তবে তার আগেই রেফারি বাঁশি বাজিয়ে অফসাইডের সিগনাল দেন।
২৬তম মিনিটে গোলরক্ষকের ভুলে বড় বিপদে পড়তে বসেছিল জার্মান। তবে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড ফেরান তোরেসের দুর্বল শটের কারণে শেষ পর্যন্ত রক্ষা পায় জার্মানি। ম্যাচের ৩৯তম মিনিটে গোল করে ফেলেছিলেন জার্মানির ডিফেন্ডার রুডিগার। তবে ভিএআরে অফসাইডের কারণে সে গোল বাতিল করে দেন রেফারি। যার ফলে গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দুই দল।
তবে বিরতি থেকে ফিরে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি স্পেনকে। ৬২ মিনিটে জার্মানির রক্ষণের ভুলে সুযোগ পেয়ে যান স্পেন। জর্ডি আলবার বা দিক থেকে পাঠানো বল ক্রস থেকে শুধু ছুঁইয়ে দেন আলভারো মোরাতা। যার ফলে এক গোলে লিড নেয় স্পেন।
তবে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় থাকা জার্মানি এরপর গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে। যার কারণে একের পর এক আক্রমণ চালায় স্পেন শিবিরে। বার বার সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও শেষমেষ ফল পায় তারা।
ম্যাচের ৮৩ মিনিটে জার্মানিকে সমতায় ফেরান ফুলক্রুগ। স্পেনের রক্ষণকে ভড়কে দিয়ে ডি-বক্সের ভিতরে চলে যান মুসিয়ালা। সেখানে পাশে থাকা ফুলক্রুগকে বল ঠেলে দিলে জালের দেখা পান তিনি। শেষদিকে দুই দল একের পর এক আক্রমণ চালালেও কোনো গোলের দেখা পায়নি। ফলে ১-১ গোলের ড্রয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে স্পেন ও জার্মানিকে।
এই ড্রয়ে দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ই গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে লুইস এনরিকের স্পেন। সমান ম্যাচে সমান ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জাপান ও কোস্টারিকা। আর দুই ম্যাচে এক পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে জার্মানি। যদিও শেষ ম্যাচে সব দলের সামনে সুযোগ থাকছে নকআউটে জায়গা করে নেওয়ার।