আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রথমবার খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তাও আবার বিশ্বকাপ মঞ্চে। এর চেয়ে দুর্দান্ত অভিষেক আর কী বা হতে পারে। আর কোচের সেই ভরসার পুরোপুরি দাম দিলেন ২১ বছর বয়সী পর্তুগিজ তরুণ গঞ্জালো রামোস। গতরাতে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচে অভিষেকেই তুলে নেন হ্যাটট্রিক। এই এক হ্যাটট্রিকেই অসংখ্য রেকর্ড গড়েন পর্তুগিজ নতুন সেনসেশন।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব শেষ হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডও শেষের পথে। কোন হ্যাটট্রিকের দেখা পাচ্ছিল না কাতারের আসর। অবশেষে দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষ ম্যাচে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকের দেখা পেল রামোসের কল্যাণে।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) লুসাইল স্টেডিয়ামে দিবাগত রাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমার্ধে একটির পর দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া গোল করেন রামোস।
দ্বিতীয় পর্তুগিজ খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে হ্যাটট্রিক করেন ২১ বছর বয়সী এই ফুটবলার। ১৯৬৬ আসরে কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ৪ গোল করেছিলেন গ্রেট ইউসেবিও।
সব মিলিয়ে দেশটির চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেলেন রামোস। ইউসেবিওর পর ২০০২ আসরে গ্রুপ পর্বে পোল্যান্ডের বিপক্ষে পাওলেতা ও ২০১৮ আসরে গ্রুপ পর্বে স্পেনের বিপক্ষে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এই কৃতিত্ব দেখান।
অভিষেকে হ্যাটট্রিক করে রামোসের নাম উঠে গেছে আরও কিছু পরিসংখ্যানের পাতায়। ২০০২ সালে জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোসার পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে প্রথমবার শুরুর একাদশে নেমেই হ্যাটট্রিকের স্বাদ গ্রহণ করেন তিনি।
৩২ বছর পর বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে কেউ হ্যাটট্রিক করলেন। সবশেষ ১৯৯০ আসরে শেষ ষোলোয় কোস্টারিকার জালে তিনবার বল পাঠিয়েছিলেন চেকোস্লোভাকিয়ার স্কুরাভি।
পর্তুগালের পোস্টারবয় রোনালদোর জায়গায় সুইসদের বিপক্ষে শুরুর একাদশে সুযোগ পান রামোস। সুযোগ পেয়েই লক্ষ্যভেদ করতে করেন ম্যাচের ১৭তম মিনিটে। তার করা গোলটাও ছিল দুর্দান্ত! বাঁ দিক থেকে জোয়াও ফেলিক্সের বাড়ানো বল ধরে সঙ্গে লেগে থাকা প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জ সামলে দুরূহ কোণ থেকে বুলেট গতির শট নেন তিনি, কাছের পোস্ট ঘেঁষে বল খুঁজে নেয় ঠিকানা।
দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে ডান দিক থেকে দিয়োগো দালোতের পাস গোলমুখে পেয়ে টোকায় নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন রামোস। আর ৬৭তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ডি-বক্সে ঢুকে দারুণ চিপ শটে এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে হ্যাটট্রিকের আনন্দে মাতেন তিনি।
রামোস আন্তর্জাতিক ফুটবলে পা রেখেছেন এখনও এক মাস হয়নি। বিশ্বকাপ শুরুর আগে গত ১৭ নভেম্বর নাইজেরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ দিয়ে দেশের হয়ে অভিষেক হয় তার।
প্রথম তিন ম্যাচে তার গোল ছিল একটি। এবার এক ম্যাচেই করলেন তিনটি, তাও আবার বিশ্ব মঞ্চে!