প্রকৃতি এখন হুমকিতে নয়, বরং আক্রমণের শিকার বলে মন্তব্য করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
তিনি বলেছেন, “রাজনীতি ও রাষ্ট্র নিয়ে আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু প্রকৃতি তথা জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কোনও মতভেদ নেই এবং থাকতেও পারে না। প্রকৃতি এখন হুমকিতে নয়, বরং এটি এখন আক্রমণের শিকার।”
ট্রুডো বলেন, আমাদের সামনে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল প্রকৃতিকে রক্ষা করা। এ বিষয়ে আমরা সবাই একমত যে, আমাদের বাঁচতে হলে পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে।
মঙ্গলবার কানাডার মন্ট্রিয়ালে জীববৈচিত্র্য নিয়ে কপ-১৫ সম্মেলনের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
নিজ দেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদের বর্ণনা তুলে ধরে তা রক্ষা করার বিষয়ে ট্রুডো বলেন, প্রকৃতি হল আমাদের একটি অংশ। আমরা এই প্রকৃতির বা জীববৈচিত্র্যের জন্য যা করছি, তা যথেষ্ট নয়। তবে সবার সমন্বয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। পৃথিবীর সব নেতাদের এক টেবিলে বসে এ নিয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়ে সব ধরনের কাজ শেষ করতে হবে। যা আমরা হারিয়েছি এই সময়ের মধ্যে তা ফিরিয়ে আগের সময়ে ফিরতে হবে।
কানাডার কুইব্যাক রাজ্যের মট্রিয়ালের পেলিস ডেস কংগ্রেসে শুরু হচ্ছে এই কপ-১৫ সম্মেলন। স্থানীয় সময় বুধবার থেকে মূল সম্মেলন শুরু হলেও মঙ্গলবার বিকালে জাস্টিন ট্রুডো সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। এতে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের প্রায় ১৩’শ প্রতিনিধি। জাতিসংঘ ও কানাডা সরকারের যৌথ আয়োজনে এ সম্মেলন চলবে দুই সপ্তাহব্যাপী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, মন্ট্রিয়াল সিটি মেয়র ভেলেরি প্ল্যান্টি, চীনের পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী হুয়াং রুনকুই এবং চীনের কুনমিং সিটি মেয়র লিও জিয়াচেন প্রমুখ।
সম্মেলনের আয়োজকরা জানিয়েছেন- প্রতিধিনিদের মধ্যে সাংবাদিক ছাড়াও বিভিন্ন দেশের প্রধান বা সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি, পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন এমন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি, বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
সরেজমিনে সম্মেলনস্থল ঘুরে দেখা গেছে- সম্মেলনে যোগ দেওয়া প্রতিটি ব্যক্তিকে করোনা টেস্ট করতে হচ্ছে। প্রতিদিনই এ টেস্ট করতে হবে। এজন্য আয়োজকদের পক্ষ থেকে কিট সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া সবাইকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের সহায়তার জন্য রয়েছে অনেকগুলো বুথ বা ডেস্ক। সাংবাদিকদের জন্য আলাদা মিডিয়া রুম তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া কানাডার প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাধারণ পুলিশ ছাড়াও ঘোড়ায় চড়ে বিশেষ পুলিশ বাহিনী নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে এই সম্মেলনের প্রথম পর্ব চীনে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু মহামারী করোনার কারণে সেটি ছিল ভার্চুয়াল। এবার দ্বিতীয় পর্বের সম্মেলনে সশরীরে ছাড়াও ভার্চুয়ালিও অনেকে যুক্ত হবেন বলে জানা গেছে।