1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২০ পূর্বাহ্ন

রোনালদোকে কান্নায় ভাসিয়ে আফ্রিকান রূপকথা লিখল মরক্কো

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২২

মরোক্কানরা তখন এক গোলে এগিয়ে। বিশ্বকাপের শেষ চারের লড়াইয়ে টিকে থাকতে আক্রমণের পর আক্রমণ করেই যাচ্ছে পর্তুগাল। পেপের একটা হেডার বেরিয়ে গেল পোস্ট ঘেঁষে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোসহ পর্তুগিজদের আফসোসটা চোখেমুখে ফুটে উঠছিল, সমতা ফেরানোর মোক্ষম সুযোগটা যে বেরিয়ে গেল হাত ফসকে!

সেই সমতা আর ফেরাতে পারেনি পর্তুগাল। ১-০ গোলে জিতে শেষ হাসি হেসেছে মরক্কো। তাতেই বিশ্বকাপে আফ্রিকান রূপকথা লিখল মরোক্কানরা। প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে বিশ্বকাপের শেষ চারে জায়গা করে নেওয়া হয়ে গেছে তাদের।

ম্যাচের শুরুটা অবশ্য তেমন বলছিল না। বলের দখল রেখে ম্যাচের লাগামটা দারুণভাবে দখলে নেওয়ার আভাসই দিচ্ছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোহীন পর্তুগাল। কোচ ফার্নান্দো সান্তোস আগের ম্যাচেও তাকে একাদশে রাখেননি। আজকের ম্যাচেও শুরুতে রোনালদোর জায়গা হয় বেঞ্চে। পর্তুগাল বলের দখল পায়ে রাখলেও আক্রমণ করতে পারেনি খুব একটা, মরক্কো যে রীতিমতো অ্যাটলাস পর্বতই তুলে রেখেছিল নিজদের গোলমুখে! এমন পরিস্থিতিতে কোচ রোনালদোর অভাব বোধ করেছেন কি না, কে জানে?

তবে বলের দখলে পিছিয়ে থাকলেও প্রথমার্ধে আক্রমণে এগিয়ে ছিল মরক্কো। প্রতি আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত রাখছিল পর্তুগালকে। প্রথমার্ধে গোলটাও পেয়ে গেল সেই এক প্রতি আক্রমণ থেকেই। আতিয়াত-আল্লাহর দারুণ এক ক্রস দেখে দারুণভাবে লাফিয়ে ওঠেন ইউসেফ এন-নেসিরি। সেই এক লাফে পর্তুগিজ রক্ষণকে ফেললেন নিচে, গোলরক্ষক ডিয়োগো কস্তার আগে বলের নাগাল পেলেন, মাথা ছোঁয়ালেন, সেই এক গোলই পর্তুগালকে স্তব্ধ করে এগিয়ে দিলো মরক্কানদের।

দ্বিতীয়ার্ধে সময় যত গড়াচ্ছিল, পর্তুগিজদের মেজাজও যেন চড়ে যাচ্ছিল। শুরুর অর্ধে ক্রসবারের বাঁধায় গোলের দেখা না পাওয়া ব্রুনো ফের্নান্দেস যখন বিরতির পরেও একটা দারুণ সুযোগ নষ্ট করলেন, তখন নিজেকেই যেন দশটা গাল দিচ্ছিলেন। এই দৃশ্যটা ছিল পুরো পর্তুগালেরই প্রতিচ্ছবি।

একের পর এক আক্রমণ মাথা কুটে মরছে মরক্কানদের বিপদসীমায়, আগের ম্যাচের মতো কাজে লাগানো যাচ্ছে না একটা সুযোগও। এমন সব মুহূর্তে রোনালদো পুরো ক্যারিয়ারজুড়েই বদলে দিয়েছেন বহু ম্যাচের দৃশ্য। সেই রোনালদোকেই এরপর কোচ সান্তোস নামান মাঠে। একবার শট নিলেন, শেষ সময়ে জাও ফেলিক্সকে একটা সুযোগ তৈরিও করে দিয়েছিলেন, তবে কাজ হয়নি। শেষ মুহূর্তে পেপের যে যে হেডারটা বেরিয়ে গেল বার ঘেঁষে, সেটায় পেপের আগে লাফিয়েছিলেন রোনালদো নিজে, তবে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। সেখানে যদি মাথাটা ছুঁয়েই ফেলত বলটা, তাহলে কাজটা হয়ে যেত, গল্পটা অন্যরকমও হতে পারত বৈকি!

তা হয়নি, তাই পর্তুগালকে ধরতে হয়েছে বাড়ির পথ। ম্যাচ শেষে খুব বেশিক্ষণ মাঠে থাকেননি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তবে যাওয়ার সময় চোখের কান্না মুছতে মুছতে বেরিয়েছেন টানেল দিয়ে। বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্নটার ইতি যে ঘটে গেছে এখানেই!

নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে হারল পর্তুগাল। তাদের হারিয়েছে যারা, সেই মরক্কো ইতিহাসও গড়ে ফেলেছে রীতিমতো। এর আগে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে চারটি আফ্রিকান দল, কিন্তু শেষ চারের চৌকাঠ মারানো হয়নি কারোই।

তবে মরক্কানরা এখানেই যে থামতে চাইবে না, তা আর বলতে। ইংল্যান্ড বা ফ্রান্স, যে-ই আসুক সেমিফাইনালে, ক্রোয়েশিয়াকে রুখে দেওয়া, বেলজিয়াম, স্পেন, পর্তুগালের মতো গোলিয়াথদের হারানো ‘কিং স্লেয়ার ডেভিড’ মরক্কো যে ছেড়ে কথা বলবে না কাউকেই!

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি