টানা তিন কার্যদিবস সূচক ও লেনদেন বাড়ার পর বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক কমেছে। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে ১০ ডিসেম্বর কী হবে- তা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। যার ফলে টানা দরপতনের সঙ্গে শেয়ারবাজারে দেখা দেয় লেনদেন খরা।
গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবেসের মধ্যে দুই কার্যদিবস তিনমো কোটি টাকার কম লেনদেন হয়। বাকি তিন কার্যদিবস লেনদেন ছিল তিনশো কোটি টাকার ঘরে। এতে লেনদেন কমতে কমতে ২০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় চলে যায়।
তবে বিএনপির গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ার পর চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। সেই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের গতি।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার এসে আবার দরপতন হয়েছে। অবশ্য দাম বাড়া বা কমার তুলনায় ডিএসই ও সিএইতে দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এখনো বেশি রয়েছে।
দাম অপরিবর্তিত থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে। ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ক্রেতার দেখা তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টা অব্যাহত থাকে।
তবে প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা। এতে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে নিচের দিকে নেমে যায় সূচক। সেইসঙ্গে বড় হয় দরপতনের তালিকা।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ২৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৮টির। আর ২৪৬টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ২৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ২০৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৩০ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬১৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সেই হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৮৬ কোটি ২১ লাখ টাকা।
টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৪ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মুন্নু সিরামিকের ২৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৩ কোটি পাঁচ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্যালভো কেমিক্যাল।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে বসুন্ধরা পেপার, মুন্নু এগারো, জেনেক্স ইনফোসিস, আমরা নেটওয়ার্ক, ওরিয়ন ফার্মা, এপেক্স ফুড এবং বিডিকম অনলাইন।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৪০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৩টির এবং ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।