গত সপ্তাহে লেনদন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজার পতনের মধ্যে ছিল। এতে সপ্তাহ শেষে দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান স্থান করে নিয়েছে, তার প্রায় তিনগুণের বেশি প্রতিষ্ঠানের স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। ফলে এক সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন তিনশ কোটি টাকার ওপরে কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের গতি।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬০ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬০ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৩২৮ কোটি টাকা।
এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৩টির। আর ২০৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১২ দশমিক ৫ পয়েন্ট বা দশমিক ২১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ১ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচক ও ডিএসই-৩০ মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহে এ সূচক কমেছে ৫ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৪১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১ দশমিক ১৯ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২২৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ২৬৮ কোটি ৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৪১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বা ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৩২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ১ হাজার ৭২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৬০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বা ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। মোট লেনদেন বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭১ কোটি ৯১ লাখ ৯১ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি ৫৮ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ৫৮ কোটি ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-বসুন্ধরা পেপার, মুন্নু সিরামিক, ওরিয়ন ফার্মা, জেনেক্স ইনফোসিস, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং এবং আমরা নেটওয়ার্ক।