পশ্চিম জার্মানির একটি গ্রামে কয়লা খনি বিরোধী বিক্ষোভ থেকে সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে আটক করা হয়। তার পরিচয় জানার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জার্মান পুলিশ।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) পশ্চিম জার্মানির একটি কয়লা খনি বিরোধী বিক্ষোভ থেকে তাকে আটক করা হয়েছিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিম জার্মানির লুয়েতজারাত গ্রামে কয়লা খনি সম্প্রসারণে কাজ চলছে। এতে ওই গ্রামটি ধ্বংস হয়ে যাবে বলে দাবি করে আসছেন পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মীরা। এর অংশ হিসেবে সেখানে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। তেমনটি একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন গ্রেটা।
গ্রেটা আটক করার আগে পুলিশ সতর্ক করেছিল যে খনির প্রান্ত থেকে সরে না গেলে বলপ্রয়োগ করে সরিয়ে দেওয়া হবে।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিক্ষোভকারীদের একটি দল গাগসবাইলা-২ নামের ওই কয়লা খনির দিকে যাওয়ার সময় গ্রেটাকে তারা আটক করে। রয়টার্সকে পুলিশ জানিয়েছে, এক ব্যক্তি খনির ভেতরে লাফিয়ে পড়েছিলেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে আরও নিশ্চয়তা দেওয়া হয় যে, গ্রেটার সঙ্গে আটক অন্যান্য ব্যক্তিদেরও পরিচয়পত্র যাচাই শেষে কোনো ধরনের অভিযোগ না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, পুলিশের তিন সদস্য গ্রেটাকে অনেকটা কোলে করে নিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় গ্রেটাকে হাসতে দেখা যায়।
আন্দোলনকারী বলছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা পোড়ানো গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে জার্মানির প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে। কারণ দেশটি ২০৩০ সালের মধ্যে খনিসমৃদ্ধ নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিল। জাতীয়ভাবে এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৩৮ সাল।
কয়লার প্রকরণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নোংরা রূপ লিগনাইট। লুয়েতজারাত গ্রামে এ কয়লাই বছরে পোড়ানো হয় আড়াই কোটি টন। এই গ্রামটি বর্তমানে জার্মান বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি আরডব্লিউই-এর মালিকানাধীন।
ধারণা করা হচ্ছে, বাসিন্দারা গ্রাম ত্যাগের পরপরই লিগনাইট উত্তোলনের জন্য এলাকাটি ধ্বংস করা হবে। আরডব্লিউই বলছে, চলতি শীতের শুরুতেই তাদের এই গ্রামের মাটির নিচ থেকে কয়লা উত্তোলন করা দরকার।
কয়লা পোড়ানোর যুক্তি হিসেবে দেশটির সরকার বলছে রাশিয়া থেকে গ্যাসের বাধা মোকাবিলা। কারণ শক্তির চাহিদা মিটাতে খনিটি সম্প্রসারণ করা দরকার।