হোস্টেল খোলা না থাকায় কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা মাঠেই রাত্রিযাপন করেনপ্রথম আলোএকদিকে পরীক্ষা, অন্যদিকে হোস্টেল বন্ধ। এ অবস্থায় কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা গতকাল সোমবার রাত কাটিয়েছেন মাঠে। তাঁরা বলছেন, যত দিন পর্যন্ত হোস্টেল খুলে দেওয়া না হবে, তত দিন পর্যন্ত তাঁরা মাঠেই থাকবেন।
কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আগত ৬০ থেকে ৭০ জন শিক্ষার্থী তোশক, কাঁথা, বালিশ ও কম্বল নিয়ে হোস্টেলের সামনে মাঠেই অনশন ও রাত্রি যাপন করছেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, গত রোববার থেকে অনেক শিক্ষার্থীর ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ সেমিস্টারের চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অনেক শিক্ষার্থী ইতিমধ্যেই পরীক্ষায় অংশ নিতে চলে এসেছেন। কিন্তু করোনার কারণে হোস্টেল না খোলায় বিপাকে পড়েছেন এসব শিক্ষার্থী। পরীক্ষার সময়টা থাকার জন্য আশপাশের মেস ও বাসা ভাড়ারও ব্যবস্থা করতে পারছেন না তাঁরা। নেই খাওয়াদাওয়ারও ব্যবস্থাও।
শিক্ষার্থীরা বলেন, হোস্টেল খোলার দাবিতে শীতের রাতে কুয়াশার মধ্যে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খোলা মাঠে রাত্রিযাপন ও অনশনের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। হোস্টেল খুলে না দেওয়া পর্যন্তে এই আন্দোলন চলবে।
ঢাকা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থী মামুন রানা, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে আসা জেনিথ খান ও নেত্রকোনার কলমাকান্দা থেকে আসা শিক্ষার্থী মো. রায়হান ইসলাম বলেন, কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়ুয়া ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী এই জেলার বাইরে থেকে এসেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই হোস্টেলে থাকেন। হোস্টেল খুলে না দিয়ে পরীক্ষার ঘোষণায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। দুই দিন ধরে বিষয়টি নিয়ে তাঁরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট থানা ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের হোস্টেল সুপার কামরুল হাসান আজ মঙ্গলবার বলেন, কারিগরি বোর্ড প্রায় দেড় মাস আগে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তাঁরা বারবার হোস্টেল খুলে দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
এ ব্যাপারে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোহা. আবদুর রকিব বলেন, যেহেতু পরীক্ষা, সেহেতু দূরদূরান্তের শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা অধিদপ্তরের সম্মতিক্রমে হোস্টেল খুলে দেওয়া উচিত। তাঁরাও হোস্টেল খুলে দেওয়ার জন্য বারবার আবেদন করছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ছাড়া তাঁদের কিছু করার থাকে না। খোলা মাঠে শিক্ষার্থীদের রাত্রিযাপনের বিষয়টি নিয়েই তিনি চিন্তিত। দ্রুত হোস্টেল খোলা হলে সবার জন্য মঙ্গল বলে তিনি মন্তব্য করেন।