ফারাক্কা ব্যারেজ সমস্যা দিল্লির বিষয়, পশ্চিমবঙ্গের নয় বলে দাবি করেছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জে গঙ্গা ভাঙনের সমস্যা সরেজমিনে পরিদর্শন করার পরে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যের সময় ওই মন্তব্য করেন তিনি।
মমতা বলেন, ‘ফারাক্কার সমস্যাটা ফারাক্কার ব্যারেজ থেকে অনেক দিন ধরেই আছে। আমরা ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের সাথে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়, দিল্লির বিষয় এটা। আমাদের নয়। তা সত্ত্বেও আমরা অনেকবার কথা বলেছি। কিন্তু ওরা আমাদের কোনও সাহায্য তো করেইনি, উপরন্তু ইন্দো-ফারাক্কা বাংলাদেশ যখন জল চুক্তি হয়, সাতশো কোটি টাকা রাজ্যের পাওয়ার কথা ছিল, এলাকাবাসীর উন্নয়নের জন্য। সেই সাতশো কোটি টাকার এক পয়সাও আজ পর্যন্ত আমাদের দেওয়া হয়নি। হয়তো ২০ বছরের বেশি হয়ে গেছে। দেবগৌড়া যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন জল চুক্তি হয়েছিল।’
গঙ্গা ভাঙন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প উল্লেখ করে মমতা বলেন, ওরা যতটা রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামায়, দাঙ্গা নিয়ে, প্ররোচনা নিয়ে, কুৎসা নিয়ে, অত্যাচার নিয়ে মাথা ঘামায়, মিথ্যে কুৎসা রটায়, সেই মাথা ঘামানোটা যদি সঠিক কাজে ব্যবহার করত তাহলে কিন্তু এই প্রকৃতি রূপসী বাংলা রূপে আরও রূপান্বিত হতে পারত। যেটা তারা দীর্ঘদিন করেনি। মমতা আজ একশো দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা, আবাস যোজনার টাকা, সড়ক নির্মাণের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে দিচ্ছে না বলে সমালোচনা করেন।
গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথাও জানান মমতা।
তিনি বলেন, ‘পর্যটনে মুর্শিদাবাদ জেলা ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সমস্যা গঙ্গা ভাঙন। আমি নীতি আয়োগকেও বলেছি। আমি মুখ্যসচিবকেও বলব, ফারাক্কা ব্যারেজ ড্রেজিং করে না। পলি পড়ে যায় একদিকে, আরেকদিকে পানি। দূরে দূরে বাড়ি করবেন। আমি এলাকার মানুষজনকে বলব, নদী থেকে বাড়ি দূরে তৈরি করুন। কমপক্ষে পাঁচ কিলোমিটার দূরে। একটু দূরে তৈরি হলে বাড়ি ভাঙন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। গতকাল ৫০ কোটি টাকা সামশেরগঞ্জের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল, পরিস্থিতি অনেকটাই ভয়াবহ। তাই ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হল। রাজ্য পরিবেশ দফতর ৫০ কোটি এবং সেচ দফতরের খাত থেকে ৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
এক বছরের মধ্যে ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা।