প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে নিওম নামে একটি ভবিষ্যতমুখী সবুজ শহর গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে সৌদি আরব৷ তবে এটি করতে গিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়ের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, নিওমের কাজ শুরু করতে হুওয়াইতাত গোত্রের মানুষদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে৷ এছাড়া উচ্ছেদ কাজে বাধা দেয়ায় একজনকে হত্যা করা হয়েছে, তিনজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে৷ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের দায়ে ৫০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷
সৌদি আরবের প্রখ্যাত নারী অধিকার কর্মী লুজেইন আল-হাথলুলের বোন লিনা আল-হাথলুল জানান, হুওয়াইতাত গোত্রের মানুষদের বিচার গোপনে করা হয়েছে৷ আমাদের মূল উদ্বেগ হচ্ছে সৌদি রক্তে নিওম গড়ে তোলা হচ্ছে৷
মানবাধিকার সংস্থা রিপ্রাইভ এর মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক পরিচালক জিড বাসুনি বলেন, জোরপূর্বক উচ্ছেদ, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা ও মৃত্যুদণ্ডের উপর ভিত্তি করে নিওম গড়ে উঠছে৷
যদিও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মেদ বিন সালমান অঙ্গীকার করেছিলেন যে, নিওম প্রকল্পের কাজের জন্য যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে যুক্ত করা হবে৷
জার্মানির কিছু কোম্পানি নিওম প্রকল্পে যুক্ত আছে৷ তাই ভবিষ্যতে সম্ভাব্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় শুধু সৌদি আরব নয়, জার্মান কোম্পানিগুলোর উপরও পড়বে বলে মনে করেন জার্মানির ‘সেন্টার ফর অ্যাপ্লায়েড রিসার্চ ইন পার্টনারশিপ উইথ দ্য ওরিয়েন্ট’ এর ঊর্ধ্বতন গবেষক সেবাস্টিয়ান সন্স৷
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক সম্প্রতি সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে বৈঠকের সময় দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আলোচনা করেন৷ সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে আইনের শাসন, মানবাধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বিবেচনা করা যায় না৷
২০৩৯ সালে নিওম উদ্বোধন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷ লোহিত সাগরের পাশে প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে এটি তৈরি হবে৷ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, দ্রুতগতির ট্রেন, ড্রোন এসব সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার থাকবে নিওমে৷ সবকিছু নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে চলবে বলে জানানো হয়েছে৷