শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী সমিতি ফেডারেশন। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
এ সময় বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী সমিতি ফেডারেশনের আহ্বায়ক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আসাদুল হক, অধ্যক্ষ হোসনে আরা ও মো. ফরিদুল হক প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আসাদুল হক বলেন, করোনার মহামারির কারণে পৃথিবীতে শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাট বিপর্যয় নেমে এসেছে এবং দেশের শিক্ষাব্যবস্থাও চরমভাবে বিপর্যস্ত। তাছাড়া আগামী ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন। এসব বিষয় বিবেচনা করে আমরা শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলনের পরিবর্তে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি ও প্রত্যাশাগুলো বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় আছি। কিন্তু আমাদের এই আন্তরিকতাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা শিক্ষার উন্নয়নে সবসময় সরকারকে সহযোগিতা করে আসছি। শিক্ষাক্ষেত্রে কোনো অচলাবস্থার সৃষ্টি হোক আমরা তা চাই না। শেষবারের মতো আমরা শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানাই, তিনি যেন আমাদের নিয়ে বসেন। আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারীদের ১২ দফা দাবির ব্যাপারে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। অন্যথায় আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হবো।
অন্যান্য দাবিগুলো হলো-
সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও পূর্ণাঙ্গ পেনশন প্রদান।
ইউনেস্কো ও আইএলওর সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষাখাতে জিডিপির ৬ শতাংশ ও জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে।
অনুপাত প্রথা বিলুপ্ত করে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের পদ বাতিল করে পূর্বের ন্যায় সহকারী অধ্যাপকের পদ চালু করা।
এমপিও শর্তপূরণকারী ও বিধি সম্মত নিয়োগপ্রাপ্ত সকল নন এমপিও এবং অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানকারী শিক্ষকদের প্যাটার্নভুক্ত করে এমপিওভুক্ত করতে হবে।
অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে আগের মতো অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করতে হবে এবং অভিজ্ঞতার আলোকে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দুটি উচ্চতর স্কেল প্রদান।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের অনুরূপ বেতন স্কেল প্রদান।
এমপিও জনবল কাঠামো- ২০২১ এর ১১.১৩ ধারা বাতিল করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইতোপূর্বে নিয়োগপ্রাপ্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক/কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের চাকরি বিধিমালা-২০১২ দ্রুত বাস্তবায়ন ও প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডিতে একজন কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের আনুপাতিক হারে কর্মচারীদের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ পদোন্নতির ব্যবস্থা করা।
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের আনুপাতিক হারে প্রেষণে নিয়োগ দিতে হবে।
কারিগরি শিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি কারিগরি ও ভোকেশনাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে হবে ও অবিলম্বে শিক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।