রংপুর অঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জনজীবন, কৃষি ও জীব বৈচিত্র্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মে মাসে রংপুরে বৃষ্টিপাত হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ৯৫ মিলিমিটার কম। গত এপ্রিল মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাত হয়েছে এই অঞ্চলে। বৃষ্টিপাত না হওয়া প্রকৃতিও রুক্ষ আচরণ করছে। কাঠফাটা রোদ অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মে মাসে রংপুরের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ছিল ২৯৫ মিলিমিটার। সেখানে মে মাসের পহেলা তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২০০ মিলিমিটার। গত বছর মে মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২৭৪ মিলিমিটার। গত বছরের চেয়ে এবার ৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টি কম হয়েছে।
শুধু মে মাস নয়, গত এপ্রিলেও রংপুর অঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ৮০ থেকে ৯০ মিলিমিটার। সেখানে বৃষ্টি হয়েছে ৪৫ দশমিক ২ মিলিমিটার। স্বাভাবিকের অর্ধেক বৃষ্টিপাত হয়েছে এপ্রিল মাসে। অথচ গত বছর এপ্রিলে বৃষ্টিপাত হয়েছিল ১৭৯ মিলিমিটার।
এদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় খরতাপের কারণে অনেক স্থানে সেচ দিয়ে ফসল রক্ষা করতে হয়েছে। এতে কৃষকদের বাড়তি খরচের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এবারে এপ্রিলে-মে মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় কেটেছে প্রচণ্ড গরম সাথে খটখটে রোদে।
বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান মনে করছেন, তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদী ও জলাধার শুকিয়ে যাওয়ায় উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্পায়ন হওয়ায় আবহাওয়ায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে। এছাড়া দক্ষিণা বাতাসের সাথে জলীয়বাষ্প না আসা, গাছপালা কমে যাওয়া, কালবৈশাখী ঝড় না হওয়ায় প্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়ে বৃষ্টিপাত কমে যাচ্ছে। ফলে প্রকৃতিতে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখি ও ফসলে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।