দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকাশিত গেজেটে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন এসেছে। গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত গেজেট আজ শনিবার বিজি প্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
যে আটটি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এসেছে সেগুলো হলো পিরোজপুর–১ ও পিরোজপুর–২, কুমিল্লা-১ ও কুমিল্লা-২, ফরিদপুর–২ ও ফরিদপুর–৪ এবং নোয়াখালী–১ ও নোয়াখালী–২। এর মধ্যে চারটি আসনের সীমানায় এসেছে বড় পরিবর্তন। আগের সীমানা অনুযায়ী, পিরোজপুর–১ আসনটি এখন পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল। নতুন সীমানায় এই আসনটি পিরোজপুর সদর উপজেলা, নাজিরপুর ও ইন্দুরকানী উপজেলা নিয়ে গঠন করা হয়েছে।
একই সঙ্গে আগে কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও ইন্দুরকানী উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-২ সংসদীয় আসনটি। নতুন সীমানা অনুযায়ী, কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠন করা হয়েছে। দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-১ আসনটি নতুন সীমানায় দাউদকান্দি ও তিতাস উপজেলা নিয়ে গঠিত হলো। আগের সীমানা অনুযায়ী হোমনা ও তিতাস উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা-২ আসনটি নতুন সীমানায় হোমনা ও মেঘনা উপজেলা নিয়ে গঠন করা হলো।
নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা এবং সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ফরিদপুর–২ আসনটি এখান থেকে কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন বাদ দেওয়া হয়েছে। সেটা যুক্ত করা হয়েছে ফরিদপুর–৪ আসনের সঙ্গে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের সীমানায় ফরিদপুর–৪ আসনটি ভাংগা ও চরভদ্রাসন এবং কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ছাড়া সদরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিলো। নতুন সীমানায় এই আসনটি ভাংগা, চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত হলো।
নোয়াখালী–১ ও ২ আসনের সীমানায় একটি ইউনিয়ন রদবদল করা হয়েছে। নোয়াখালী–১ থেকে বজরা ইউনিয়ন কেটে নোয়াখালী–২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। নোয়াখালী–১ আসনটি চাটখিল উপজেলা এবং বারগাঁও, নাটেশ্বর ও অম্বর নগর ইউনিয়ন বাদে সোনাইমুড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিলো। এখন সেটি হলো চাটখিল উপজেলা এবং বারগাঁও, নাটেশ্বর, অম্বর নগর ও বজরা ইউনিয়ন বাদে সোনাইমুড়ী উপজেলা নিয়ে।
আর সেনবাগ উপজেলা এবং সোনাইমুড়ী উপজেলার বারগাঁও, নাটেশ্বর ও অম্বর নগর নিয়ে আগে গঠিত নোয়াখালী–২ আসনটি নতুন সীমানায় সেনবাগ উপজেলা ও সোনাইমুড়ী উপজেলার বারগাঁও, নাটেশ্বর, অম্বরনগর ও বজরা ইউনিয়ন নিয়ে গঠন হয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা ‘পুনর্নির্ধারণ’ করে তা খসড়া আকারে প্রকাশ করে ইসি। তবে খসড়ায় আসনগুলোর বর্তমান সীমানা বহাল রাখা হয়েছিল। নতুন প্রশাসনিক এলাকা (উপজেলা, ওয়ার্ড) সৃষ্টি হওয়ায় শুধু ছয়টি সংসদীয় আসনে পরিবর্তন প্রস্তাব করা হয়েছিল। তবে তাতে কোনো আসনের বর্তমান সীমানার পরিবর্তন হয়নি। শুধু নতুন প্রশাসনিক এলাকার নাম যুক্ত হয়েছে।
ইসির খসড়ার ওপর স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের দাবি- আপত্তি জানানোর সময় দেওয়া হয়েছিল। সেসব দাবি- আপত্তি নিয়ে শুনানি শেষে নতুন সীমানা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ১ জুন তারিখে প্রজ্ঞাপনে সই করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম। প্রজ্ঞাপনটি আজ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।