বিনা অনুমতিতে ডিএনসিসি এলাকায় উন্নয়নের দোহাই দিয়ে কোনো গাছ কাটলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
আজ শুক্রবার (২ জুন) বিকালে রাজধানীর হাতিরঝিলে ‘লেটস সেভ দ্য প্লানেট’ শিরোনামে প্রাণ-আরএফএলের উদ্যোগে দেশজুড়ে প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ‘গাছের বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট। আমি বারবার বলেছি উন্নয়নের নামে গাছ কাটলে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। সড়কের বিদ্যমান গাছগুলো না কেটেই উন্নয়ন কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি, মিরপুরস্থ টেকনিক্যাল ক্রসিংয়ে সড়ক বিভাজক নির্মাণকালে ঠিকাদার কয়েকটি গাছ কেটে ফেলেছে। ঠিকাদার সিটি করপোরেশনের অনুমতি না নিয়ে, নির্দেশনা অমান্য করে গাছ কাটার কারণে তাকে ডিএনসিসিতে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া এই প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুজন প্রকৌশলীকেও বরখাস্ত করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ সব ঠিকাদার ও বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য একটি কঠোর বার্তা। সোজা কথা, ডিএনসিসিতে গাছ কেটে কোনো উন্নয়ন করা যাবে না।’
তিনি বলেন, জরুরি প্রয়োজনে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা গাছ কাটতে চাইলে সিটি করপোরেশনকে জানাতে হবে। আমরা পরিবেশবিদ, নগর পরিকল্পনাবিদসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলাপ করে সম্ভব হলে অনুমোদন দিবো। অনুমোদন ছাড়া ডিএনসিসি এলাকায় কোনো গাছ কাটা যাবে না।
প্লাস্টিক বোতল প্রতিনিয়ত পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে উল্লেখ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো প্লাস্টিক বোতলে পণ্য বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ মুনাফা অর্জন করছে। তারা ব্যবসা করে পরিবেশের দূষণ করবে এটা হতে পারে না। প্রাণ আরএফএল যেভাবে দায়িত্ব নিয়ে করছে, প্লাস্টিক দূষণ রোধ করতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকেই দায়িত্ব নিতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় উৎপাদনকারীদের প্লাস্টিক বর্জ্য রিডিউস, রিসাইকেল, রিইউজ করা পাশাপাশি মডেল চালু করতে হবে। সার্কুলার ইকোনমি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
মেয়র আরও বলেন, আমরা নিজেরাই পরিবেশের ক্ষতির জন্য দায়ী। পরিবেশের ক্ষতি করায় এখন পরিবেশ তার প্রতিশোধ নিচ্ছে। বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টি হচ্ছে না। দেশজুড়ে তীব্র গরম। বিশেষ করে ঢাকা শহর হিট আইল্যান্ডে পরিণত হয়েছে। হিট হচ্ছে সাইলেন্ট কিলার। ঢাকা শহরকে বাঁচাতে হলে পরিবেশকে বাঁচাতে হবে।
নগরবাসীকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে মেয়র আতিক বলেন, সম্ভাব্য সব খালি জায়গায় গাছ লাগাতে হবে। অনেকে বলতে পারেন ঢাকা শহরে গাছ লাগানোর জায়গা নাই। আমরা সিটি করপোরেশন থেকে খালের পাড়ে, সড়ক বিভাজকে ও ফুটপাতে গাছ লাগানো শুরু করেছি। ক্লিনিং ও গ্রিনিং এর পাশাপাশি আমরা ফিডিং এ গুরুত্ব দিচ্ছি। খালের পাড়ে ফলের গাছ লাগানো হবে যেন মানুষ খেতে পারে। হর্টিকালচার ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের থেকে রাস্তার মিডিয়ান ও ফুটপাতের জন্য গাছের তালিকা নিয়েছি। ফুটপাতে যেন পাখিরা বসতে পারে সেই ধরনের গাছ লাগানো হবে।