1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন

চার মাস আগেই সতর্ক করা হয়েছিল: ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩

ভারতের ওড়িশার বালাসোরের বাহাঙ্গা রেল স্টেশনে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে। এ ঘটনায় প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১১ শতাধিক মানুষ। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা নিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে তদন্ত।

তবে দুর্ঘটনার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছিল আরও চার মাস আগে। কিন্তু বিষয়টি গ্রাহ্যই করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ভারতের ওড়িশার বালাসোরের বাহাঙ্গা রেল স্টেশনে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে। এ ঘটনায় প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১১ শতাধিক মানুষ। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা নিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে তদন্ত।

তবে দুর্ঘটনার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছিল আরও চার মাস আগে। কিন্তু বিষয়টি গ্রাহ্যই করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, আপ মেইন লাইনে যাওয়ার জন্য সিগন্যাল সবুজ হয়ে থাকলেও, পয়েন্ট-এর (যার মাধ্যমে ট্রেন লাইন-পরিবর্তন করে) অভিমুখ খোলা ছিল লুপ লাইনের দিকে।

করমন্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রাথমিক তদন্তে এই তত্ত্ব উঠে আসতেই তোলপাড় গোটা ভারত। অথচ সিগন্যালিং ব্যবস্থায় এ ধরনের গন্ডগোলের চড়া মাসুল যে আগামী দিনে যেকোনও সময়ে দিতে হতে পারে, অন্তত চার মাস আগে সে বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন দক্ষিণ-পশ্চিম রেলের প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার হরিশঙ্কর বর্মা! ওই জোনের জেনারেল ম্যানেজারকে লেখা চিঠিতে সিগন্যালিং ও পয়েন্টের তালমিলের অভাবে প্রায় হতে যাওয়া একটি দুর্ঘটনার বিষয়েও বিশদে জানিয়েছিলেন তিনি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এখন প্রশ্ন উঠছে, সময় থাকতে ওই সতর্কবাণী কানে না তোলারই কি খেসারত এতগুলো প্রাণ?

এই প্রশ্ন এখন ওঠার মূল কারণ, চার মাসে আগে জমা পড়া রিপোর্টে দুর্ঘটনার বিবরণের সঙ্গে করমন্ডলের দুর্ঘটনার ‘মিল’। বর্মার রিপোর্ট অনুযায়ী, ৮ ফেব্রুয়ারি মাইসুরু ডিভিশনে ১২৬৪৯ আপ সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস হোসদুর্গ স্টেশন ছাড়ার পরে আপ লাইনে যাওয়ার সিগন্যাল পান চালক। কিন্তু কিছুটা এগোতেই দেখতে পান, সিগন্যাল আপ লাইনে যাওয়ার জন্য সবুজ থাকলেও, পয়েন্ট ডাউন লাইনের দিকে খুলে রয়েছে। সে দিন সম্পর্কক্রান্তির চালক পয়েন্টের গন্ডগোল দেখেই ট্রেনটি দাঁড় করিয়ে দেন। এ ক্ষেত্রে ট্রেনের গতিবেগ কম থাকা ও চালক সতর্ক থাকার কারণে সম্পর্কক্রান্তির ডাউন লাইনে যাওয়া আটকানো সম্ভব হয়েছিল। ঘটনাচক্রে, ওই লাইনে কয়েক মিনিট পরেই একটি মালগাড়ি আসার কথা ছিল। অর্থাৎ, সে দিন চালক সতর্ক না থাকলে, চার মাস আগেই করমন্ডল এক্সপ্রেসের মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকত গোটা ভারত।

শুক্রবার সন্ধ্যায় আপ করমন্ডল এক্সপ্রেসের জন্য মেইন লাইনে যাওয়ার সবুজ সিগন্যাল দেওয়া থাকলেও, পয়েন্ট খোলা ছিল লুপ লাইনের দিকে। যেখানে ঢুকে তা আছড়ে পড়ে ওই লাইনে আগেই দাঁড়িয়ে থাকা লৌহ আকরিক বোঝাই মালগাড়িতে।

এই রিপোর্টের ভিত্তিতে কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেড়ার বক্তব্য, “চার মাস আগে সতর্কবার্তা পাওয়া সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ! কেন ওই রিপোর্ট ফেলে রাখা হয়েছিল, সেই জবাব দিতে হবে রেলমন্ত্রীকে। বিষয়টিকে রেল মন্ত্রণালয় গুরুত্ব দিলে, আজ এত মানুষের প্রাণ যেত না।”

রিপোর্টে বর্মা পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, যে রকম স্বয়ংক্রিয়ভাবে পয়েন্ট ভুল অভিমুখে ঘুরে গিয়েছিল, তা থেকে স্পষ্ট যে, সিগন্যালিং ও পয়েন্ট ইন্টারলকিং ব্যবস্থার মধ্যে কোথাও বড় মাপের গলদ রয়েছে। কারণ, সিগন্যাল একটি লাইনে দেখানো ও আর পয়েন্টের অন্য লাইনের দিকে ঘুরে থাকা ইন্টারলকিং ব্যবস্থার পরিপন্থী।

বর্মা জানিয়েছিলেন, দ্রুত এই সমস্যার কারণ চিহ্নিত না করলে, আগামী দিনে বড় মাপের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।

করমন্ডলের দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সিগন্যালিং ব্যবস্থার ত্রুটি এ দিন মেনে নিয়েছেন রেল বোর্ড সদস্য (অপারেশন) জয়া বর্মা সিনহা। তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে যা জানা গেছে, তাতে সিগন্যালিং ব্যবস্থায় কিছু ত্রুটি চিহ্নিত করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে ওই ত্রুটি হতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে শর্ট সার্কিট, কোনও একটি পয়েন্টের সঙ্গে যুক্ত তারেরনেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। কয়েকজন লোককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এর থেকে বেশি কিছু এখনই বলা যাবে না।”

নাশকতার সম্ভাবনা রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে জয়া বর্মা বলেন, “কোনও সম্ভাবনাই এই মুহূর্তে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।”

এ দিন সন্ধ্যায় দুর্ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নাশকতা খুঁজে দেখার সম্ভাবনাকে আরও উস্কে দিয়েছে। সিগন্যালিং ব্যবস্থায় ওই গন্ডগোল ইচ্ছাকৃত নাকি প্রযুক্তিগত ত্রুটি, নাকি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই তা হয়েছে— করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরে এখন তা খুঁজে দেখছেন কমিশন অব রেলওয়ে সেফটির সদস্যরা।

পারিপার্শ্বিক সব দিক বিচার করে এই দুর্ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। যদিও এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের অভিযোগ, নিজেদের দায় এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের নেতৃত্বাধীন সিবিআইয়ের হাতে ওই মামলা তুলে দেওয়া হল। যাতে রেলের সব ধরনের ত্রুটির উপরে পর্দা টানা সম্ভব হয়। সূত্র: ইটিভি ভারত 

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি