আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করেছিলেন মানুষের মুক্তির জন্য, মানুষকে একটা উন্নত জীবন দেওয়ার জন্য। পাকিস্তানি শাসকদের আমলে বাঙালিদের কোনো অধিকার ছিল না। চিরদিন অবহেলিত ছিলাম আমরা। অথচ পাকিস্তান সৃষ্টিই হয়েছিল এই বাঙালিদের দ্বারা। কিন্তু সে আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। পাকিস্তানি দ্বারা আমরা ছিলাম শোষিত, বঞ্চিত। যতো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বাংলাদেশ থেকে হতো, অথচ এই অর্থ ব্যবহার হতো পশ্চিম পাকিস্তানে।
ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার (৭ জুন) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ছয় দফার পেশ করতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। প্রেস কনফারেন্স করে এটা বলে আসেন এবং তার (বঙ্গবন্ধু) ওপর হামলাও করা হয়েছিল। ঢাকায় ফিরে এসে সঙ্গে সঙ্গে তিনি প্রেস কনফারেন্স করেন। ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে একটা পাস করানো হয়। কাউন্সিল ডেকে কাউন্সিলে একটা পাস করানো হয়। মাত্র কয়েক মাসে সারা বাংলাদেশ ঘুরে ছয় দফার ব্যাপক প্রচার করেন। যে কোনো একটা দাবি এত অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের মধ্যে সাড়া জাগানো, এটা ছিল একটা অভূতপূর্ব ঘটনা। যেটা ছয় দফার ব্যাপারে হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) আমাদের বলতেন, ছয় দফা তিনি দিয়েছেন, কিন্তু ছয় দফার প্রকৃত অর্থ হলো এক দফা, অর্থাৎ স্বাধীনতা। ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় এসে নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এ নির্বাচন অনেকগুলো শর্ত দেওয়া হয়েছিল। তাতে আমাদের দেশে অনেক দল অনেক নেতা নির্বাচনে যেতে রাজি ছিল না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, আমি নির্বাচন করব। ছয় দফার ওপর ভিত্তি করে এ নির্বাচন, এই নির্বাচনে জনগণের নেতা কে হবে সেটা নির্বাচিত হবে, কে জনগণের নেতা সেটা নির্বাচিত হবে। এখানে কথা বলার অধিকার হবে। সে নির্বাচনে মুসলিম লীগ ২০ দলীয় জোট ছিল আর আওয়ামী লীগ একা। তাদের ধারণা ছিল যে ২০ দলীয় জোট কমপক্ষে বিশটা সিট পাবে। কিন্তু পেয়েছিল তার মাত্র দুইটা সিট। সমগ্র পাকিস্তানের অ্যাসেম্বলিতে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ সিট পেয়ে যায়। কিন্তু ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। ছয় দফা মানুষ লুফে নিয়েছিল, এই ছয় দফা থেকে এক দফার উত্থান।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শাহজাহান খান, সিমিন হোসেন রিমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।
আলোচনা সভায়টি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম।