খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, আমরা যে সুস্থ জাতির স্বপ্ন দেখছি, সেটি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা ছাড়া সম্ভব নয়। সব নাগরিকের কর্মক্ষমতা ও সুস্থ জীবনযাপনের প্রয়োজনে খাদ্য, পুষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন কাজ। ভেজাল প্রতিরোধ এখন শুধু জনস্বাস্থ্যের বিষয় নয়, সুস্থ জাতি গঠনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আজ রোববার (১১ জুন) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে দশম আন্তর্জাতিক নিরাপদ খাদ্য ফোরাম’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে তিনি এ কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, খাদ্য মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম। সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হচ্ছে সব নাগরিকের খাদ্যের চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা। এ ছাড়া জনগণের পুষ্টি, উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে রাষ্ট্রের প্রাথমিক দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরে এসে আমাদের সংবিধান উপহার দেন। যেখানে তিনিও অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
খাদ্যমন্ত্রী জানান, জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভোক্তার দোরগোড়ায় ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ গৃহীত হয়। এই আইন বাস্তবায়ন ও সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, আজকের এই আয়োজন পুষ্টি সমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বৈশ্বিক ও সম্মিলিত অঙ্গীকারের একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। খাদ্য নিরাপত্তা সুস্থ, সমৃদ্ধ ও কার্যকর জাতি বিনির্মাণের অন্যতম পূর্ব শর্ত।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, যেহেতু আজকের অনুষ্ঠানটি নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজন এবং নীতিনির্ধারকদের মধ্যে একটি মতবিনিময়ের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে, তাই আমি তাদের আহ্বান জানাই, দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলোর ওপর যথাযথ আলোকপাত করার জন্য।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকায় কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এটা শুধু একটি কর্তৃপক্ষ বা মন্ত্রণালয় দিয়ে করা সম্ভব নয়। এটি অংশীদারিত্বমূলক কার্যক্রম। যেখানে কার্যকর নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সৃষ্টিতে সবাইকে একটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি কাজগুলো যথাযথ ও যৌক্তিকভাবে করতে হবে। তা না হলে আমরা যে সুস্থ, সবল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন দেখছি, যাদের হাত ধরে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে, তা বাস্তবায়ন করা খুব কঠিন।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য আমাদের বিস্তৃত ও কার্যকর পদক্ষেপ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। যা সমস্ত খাদ্যগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করবে। সে জন্য যথাযথ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রয়োজন। সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার জন্য প্রয়োজন যথাযথ বিনিয়োগ। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল ও স্মার্ট বিনিয়োগের কথা আমরা ভেবে দেখতে পারি।