1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন

৪০ দিন বেঁচে থাকা আমাজন জঙ্গলে ৪ শিশুর মা মৃত্যুর আগে যে নির্দেশনা দেন

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩

ছোট আকারের একটি উড়োজাহাজ গত ১ মে কলম্বিয়ার আমাজন জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়। এতে পাইলটসহ প্রাপ্তবয়স্ক তিন ব্যক্তি নিহত হন। উড়োজাহাজে থাকা চার শিশুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে শিশুদের মা মাগদালেনা মিউকুটিউ রয়েছেন। তিনি হুইতোতো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নেত্রী ছিলেন।

তল্লাশি চালাতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরসহ ১৫০ সেনাকে মোতায়েন করা হয়। যোগ দেন নিখোঁজ শিশুদের বাবাসহ স্থানীয় ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষেরা।

দুর্ঘটনার ৪০ দিন পর গত শুক্রবার কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো এক টুইটে জানান, নিখোঁজ চার শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনাকে ‘পুরো দেশের জন্য আনন্দজনক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জাগুয়ার, বিভিন্ন প্রজাতির সাপসহ নানা বন্য পশুপাখির আবাস আমাজন জঙ্গলে চার শিশুর এত দিন বেঁচে থাকাকে ‘অলৌকিক’ বলছেন কেউ কেউ। অনেকেরই মনে প্রশ্ন, এতদিন কীভাবে বেঁচে ছিল এসব শিশু?

 

 

শিশুদের উদ্ধারের পর কর্তৃপক্ষ জানায়, টানা ৪০ দিন গভীর জঙ্গলে থাকার পরও এই চার শিশু বেঁচে ছিল তাদের নানির কল্যাণে। এই চার শিশুর সবচেয়ে বড় ১৩ বছর বয়সী মেয়ে শিশুকে তার নানি খুব ছোটবেলা থেকে গভীর জঙ্গলে মাছ ধরা ও শিকারের কলাকৌশল শিখিয়েছিলেন।

এমনকি প্রকৃতি থেকে খাবার সংগ্রহের উপায়ও শেখানো হয়েছিল তাকে। উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পর এসব কৌশল প্রয়োগ করে সে। ফলে আমাজনের গভীরে বেঁচে থাকার জন্য খাবার সংগ্রহে সহায়তা করে তার নানির শেখানো কৌশল।

কলম্বিয়ার জাতীয় আদিবাসী সংগঠনের লুই আকোস্তা জানান, শিশুরা বিভিন্ন বীজ, ফল, শিকড়বাকড় খেয়েছে। তারা যেগুলোকে খাওয়া যাবে বলে মনে করেছে, সেগুলোই খেয়েছে।

উদ্ধারের পর চার শিশুকে সেনাবাহিনীর উড়োজাহাজে করে রাজধানী বোগোতায় নেওয়া হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের নেওয়া হয় হাসপাতালে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইভান ভেলাসকুজ শিশুদের দেখতে হাসপাতালে যান। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তারা সেরে উঠছে। তবে এখন পর্যন্ত তারা শক্ত খাবার খেতে পারছে না।

উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে দুই শিশুর প্রথম কথা ছিল, ‘আমি ক্ষুধার্ত’ এবং ‘আমার মা মারা গেছেন’। উড়োজাহাজটি বিধ্বস্তের পর চার দিন তাদের মা বেঁচে ছিলেন বলেও জানায় তারা।

উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া কর্মীরা এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান। তাদের সাক্ষাৎকারটি গতকাল রবিবার কলম্বিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভিসিতে সম্প্রচারিত হয়।

১৩, ৯, ৪ ও ১ বছর বয়সী এই চার শিশুর কথা জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। ১৩ বছর বয়সী শিশুর নাম লেসলি। এই মেয়েশিশু উদ্ধারকর্মীদের বলেছে, তার মা মৃত্যুর আগে বলেন, ‘বাচ্চারা, তোমাদের এখান (আমাজন জঙ্গল) থেকে অবশ্যই বের হতে হবে। তোমাদের বাবা খুবই স্নেহশীল মানুষ। আমি তোমাদের যতটা ভালোবেসেছি, সেও তোমাদের ততটাই ভালোবাসা দিয়ে বড় করবে।’

নিকোলাস ওরদোনেজ গোমেজ নামের এক উদ্ধারকর্মী সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সবচেয়ে বড় মেয়েশিশু লেসলি আমার দিকে দৌড়ে আসে, তখন তার কোলে ছিল সবচেয়ে ছোট শিশুটি। লেসলি বলে, “আমি ক্ষুধার্ত”।’

গোমেজ আরও বলেন, ‘বাকি দুই ছেলেশিশুর মধ্যে একটি শুয়ে ছিল। সে উঠে দাঁড়ায় এবং আমাকে বলে, “আমার মা মারা গেছেন”।’

তখন ওই শিশুদের সঙ্গে ইতিবাচক কথাবার্তা শুরু করেন উদ্ধারকর্মীরা। উদ্ধারকর্মীরা শিশুদের বলেন, ‘তোমাদের বাবা, কাকা আমাদের পাঠিয়েছে। আমরা তাদের বন্ধু। ফলে আমরাও তোমাদের পরিবারের সদস্য।’

পরে উদ্ধারকর্মীরা গান ধরেন এবং শিশুদের হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করেন।

সূত্র : এএফপি, আল-জাজিরা

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি