ঐতিহাসিক সফরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে উড়াল দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার সকালে তাকে বহনকারী বিমান উড্ডয়ন করে। দীর্ঘ বিমানযাত্রার পর ভারতীয় সময় বুধবার ভোররাত দেড়টায় আমেরিকায় পা রাখবেন মোদী।
এই সফরে একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দেবেন মোদী। তার এই সফরকালে স্বাক্ষরিত হতে পারে একাধিক ঐতিহাসিক চুক্তি।
মোদীর এই সফরকে ঐতিহাসিক বলা হচ্ছে, কারণ এ নিয়ে দ্বিতীয়বার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন তিনি। এর আগে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী দুইবার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেননি। উইনস্টন চার্চিল ও নেলসন ম্যান্ডেলা ছাড়া আর কেউ এই সম্মান পাননি।
সূচি অনুযায়ী, আগামী ২২ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা নরেন্দ্র মোদীর।
উল্লেখ্য, দুই রাষ্ট্রনেতা একাধিকবার মুখোমুখি হয়েছেন বিগত কয়েক বছরে। তবে এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ আলোচনার জন্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন তারা।জানা গেছে, মোদীর সফরে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হতে যাচ্ছে জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) ও হিন্দুস্তান অ্যারোনেটিকস লিমিটেডের (হ্যাল) মধ্যে জেট ইঞ্জিন চুক্তি। এই চুক্তি হলে ভারতে জিই-এফ৪১৪ জেট ইঞ্জিন তৈরি করবে জিই। তাদের সহযোগী হবে হ্যাল। জিই এই ইঞ্জিনের প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে। এই ইঞ্জিন মার্কিন নৌবাহিনীর এফ/এ১৮ হরনেট বিমানে ব্যবহার করা হয়। মার্কিন নৌবাহিনীর এই যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন-প্রযুক্তি আগে কোনো দেশকে দেওয়া হয়নি। এই চুক্তিকে তাই খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে দুই দেশ। এছাড়াও আরও কয়েকটি প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত চুক্তি হওয়ার কথা আছে।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বাইডেন এর আগো ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়োলকে রাষ্ট্রীয় সফরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং হোয়াইট হাউসে ডিনারের ব্যবস্থা করেছিলেন। এবার তৃতীয় রাষ্ট্রনেতা হিসেবে মোদী সেই সুযোগ পেলেন। এই নিয়ে ছয়বার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন মোদী।
মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ, হোয়াইট হাউসে ডিনার ছাড়াও মোদী বুধবার জাতিসংঘে বিশ্ব যোগ দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক করবেন, শুক্রবার তিনি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা করবেন। প্রবাসী ভারতীয়দের সম্মেলনেও ভাষণ দেবেন মোদী। তার জন্য প্রবাসী ভারতীয়রা টাইম স্কোয়ার, গোল্ডেন গেট ব্রিজে সমবেত হয়ে বার্তা পাঠাবেন।
মোদী বলেছেন, “আমার মার্কিন সফর নিয়ে কংগ্রেস সদস্যরা, বিভিন্ন স্তরের মানুষ উৎসাহ দেখাচ্ছেন, তাদের মতামত জানাচ্ছেন। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। তারা যে কথা বলেছেন, তার থেকেই বোঝা যাচ্ছে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক কতটা মজবুত।”
ওয়াশিংটন থেকে মোদী কায়রো যাবেন তার প্রথম মিশর সফরে। সেখানে মিশরের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করবেন। গতবছর ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে মিশরের প্রেসিডেন্ট প্রধান অতিথি ছিলেন। সূত্র: পিটিআই, এপি, এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টিভি নিউজ