পাহাড়ে জমে উঠেছে পশুর হাট। কাপ্তাই হ্রদের নৌপথে দূর পাহাড় থেকে প্রায় প্রতি ঘণ্টায় আসছে হাজারো গরু, মহিষ ও ছাগল। বাহারি রঙ আর আকর্ষণীয় গড়নের গরুতে হাট হয়ে উঠেছে বৈচিত্র্যময়। এরই মধ্যে বেড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশী গরুর চাহিদা বেশি। তবে দামও বেশি। অন্যদিকে বেশি লাভের আশায় পাহাড়ের গরু ও মহিষ বাজারজাত হচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ আশপাশের জেলায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শনিবার ছিল সাধারণ হাট। সে হাটে সবজির চেয়ে বেশি উঠেছে দেশী গরু। রাঙামাটির জেলার ছয়টি উপজেলা নদী পথে। কাপ্তাই হ্রদে ইঞ্জিনচালিত বোটে চরে আসছে এসব পাহাড়ি গরু। জেলার লংগদু, মাইনি, জুরাছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি, সুবলং, নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়ি উপজেলাসহ বেশ কয়েকটি স্থান থেকে আনা হচ্ছে হাজারো পাহাড়ি গরু। আর এসব গরুর বাজার বসেছে রাঙামাটির ট্রাক টার্মিনাল এলাকায়।
গরু বিক্রেতা শামসু উদ্দীন জানান, রাঙামাটির পাহাড় থেকে ১৭ লাখ টাকায় ২২টি গরু নিয়ে এসেছেন। চাহিদা থাকায় সব গরু বিক্রি হয়ে গেছে। অনেক ব্যাপারী গরু নিয়ে গেছেন চট্টগ্রামে। তাদেরও ভালো লাভ হয়েছে।
একই কথা জানালেন আরেক গরু ব্যবসায়ী মো. জয়নাল। এবার বড় গরুর চেয়ে, ছোট গরুর চাহিদা বেশি। দামও একটু বেশি। কারণ নৌপথে গরু নিয়ে আসতে বেশ কষ্ট। কাপ্তাই হ্রদের পানি কম থাকায় ইঞ্জিন বোটে নিয়ে আসা যাচ্ছে গরু। তবে পরিবহন খরচ বেশি।
এবার ছোট গরু বিক্রি হচ্ছে ৭৫ হাজার থেকে ৯৫ হাজারের মধ্যে। আর একটু বড় গরুগুলো বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত।
তবে গরু কিনতে এসে মো. সোলায়মান অভিযোগ করে বলেন, গরুর বাজারে ব্যবসায়ীদের চেয়ে দালালদের দৌরাত্ম্য অনেক বেশি। তাই সঠিক দামে মিলছে না গরু। এতে ক্রেতাদেরও ভোগান্তি বেড়েছে।
রাঙামাটি পৌর মেয়র মো. আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, এবার পৌরসভার পক্ষ থেকে মাত্র একটি পশুর হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দ্রুত বর্জ্য অপসারণের জন্য পৌর কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছোট গরুর হাসিল ৫০০ টাকা। আর বড় গরুর হাসিল ১০০০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে দালাল চক্রের কারণে ক্রেতাদের প্রতি গরু থেকে হাসিলের টাকা হিসেবে গুনতে হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।