আর মাত্র দু’দিন পর ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গরুর হাটগুলোতে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে বেচাকেনা। হাটগুলোতে দেশি গরুর আমদানি বেশি থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই খুশি। স্থানীয়ভাবে ক্রেতাদের আগমন ঘটার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররাও আসছেন হাটগুলোতে। তবে আর দু’দিন হাট থাকায় বেচাকেনা বাড়ার সম্ভাবনা আরও রয়েছে।
জানা গেছে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৯টি গরুর হাট রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, সদর উপজেলার বটতলা হাট ও রামচন্দ্রপুর হাট, শিবগঞ্জ উপজেলার তর্তিপুর হাট, খাসের হাট ও কানসাট হাট, গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর হাট, ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ী হাট ও নাচোল উপজেলার সোনাইচন্ডি হাট। এই হাটগুলোতে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার বটতলা পশুহাটে ছোট-বড় আর মাঝারি আকারের গরুতে ভরপুর হয়ে উঠেছে হাটটি। সপ্তাহে প্রতি মঙ্গলবার ও শুক্রবার এখানে গরুর হাট বসে। ক্রেতা-বিক্রেতা আর ব্যাপারীদের আনাগোনায় সরগরম হয়ে ওঠে এ হাটটি। তবে ক্রেতাদের কাছে বড় গরুর পাশাপাশি মাঝারি ও ছোট আকারের গরুর চাহিদা বেশি। বড় গরু নামলেও তেমন চাহিদা নেই বলে বিক্রেতা এহসান আলী জানান।
তিনি বলেন, বড় গরুগুলো সাধারণত পাইকাররা কিনে নেয়। কিন্তু বড় আকারের গরুর তুলনায় অধিকাংশ ক্রেতাদের পছন্দ দেশি জাতের মাঝারি আকারের গরু। আর ক্রেতারা তাদের সাধ্যমতো গরু ক্রয় করেছেন। এদিকে হাটের নিজস্ব গণ্ডি পেরিয়ে রাস্তায় গরু বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে হাটে গরুগুলো এলোমেলোভাবে রাখার কারণে ক্রেতাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
কয়েকজন ক্রেতা বলেন, হাটে বাঁশের খুঁটি দিয়ে গরুগুলো সারিবদ্ধভাবে বেঁধে রাখলে গরুগুলো দেখা সহজ হতো। গরু ব্যবসায়ী ওবাইদুল জানান, তার ছোট খামার রয়েছে, সেখানে ছোট ও মাঝারি মানের গরু পালন করেন তিনি। এবারও হাটে এনেছেন বিক্রির জন্য। ২ থেকে সাড়ে ৩ মণ ওজনের এসব গরু স্থানীয় ক্রেতারা কিনছেন।
তিনি বলেন, গড়ে ৮০ হাজার থেকে সোয়া ১ লাখ টাকা দামে বিক্রি করা হয়েছে তার গরুগুলো। আরেক গরু বিক্রেতা আইনাল জানান, অবিক্রিত গরু বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে চাহিদার তুলনায় কম দামেই গরু বিক্রি করতে হয়। তবে একহাটে গরু বিক্রি না হলে পাশের জেলার হাটে গিয়ে গরুগুলো বিক্রি করা হয়ে থাকে।
ক্রেতা নাইমুল ও শামিম হোসেন বলেন, সাধ্যের মধ্যে ভাগাভাগিতে মাঝারি মানের গরু কেনা হয়েছে। তবে এবার গরুর দাম গতবারের চেয়ে বেশি বলে জানান তিনি।
জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জেলায় এবার ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৯০টি গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৫০ হাজার বেশি। তিনি আরও বলেন, জেলার কোরবানির হাটগুলোতে প্রাণিসম্পদ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এ সকল টিম নির্ধারিত দিনে পশুর হাটগুলোতে স্থানীয় প্রশাসন ও হাট ইজারাদারদের সাথে রোগাক্রান্ত গরু শনাক্তকরণে কাজ করছে।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুরহাটে কেউ যাতে প্রতারিত বা সমস্যায় না পড়ে, তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।