বেগম খালেদা জিয়া কঠোরভাবে নির্দেশ দিলেন যে, তার চিকিৎসা এবং জামিন বিষয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দ যেনো কোনও কথা না বলে। ভবিষ্যতে কথাবার্তা বলা হলে তাদের বিরুদ্ধে তিনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। আজ দুপুরে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খানকে টেলিফোন করে বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার খালেদা জিয়ার বরাত দিয়ে এ কথা জানান।
উল্লেখ্য যে, গতকাল বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তার জামিনের শর্ত শিথিল করে তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হোক। এর আগেও বিএনপি নেতারা এধরনের কথাবার্তা বলেছেন এবং তখন বেগম খালেদা জিয়া একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার জামিন সংক্রান্ত বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছে আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আইন মন্ত্রণালয় থেকে খালেদা জিয়ার যে, জামিনের আবেদন যেটি শামীম ইস্কান্দার করেছিলেন, সেটিতে খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবে এমন কোনও অনুরোধ করা হয় নি। অর্থাৎ তার জামিনের আবেদনে বিদেশে যাওয়ার প্রসঙ্গটি ছিলোই না।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া শুধু জামিন চেয়েছেন, তিনি কখনো বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন নি। কাজেই তিনি যেভাবে আবেদন করেছিলেন সেভাবেই ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ অনুযায়ী তাকে জামিন দেয়া হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন যে, বিএনপি নেতারা মাঠ গরম করার জন্য এখন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছেন। আর এধরনের বক্তব্য বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়টিকে আরো জটিল করে তুলতে পারে এবং ভবিষ্যতে জামিন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। আর এ কারণেই বেগম খালেদা জিয়া এই ব্যাপারে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নিয়ে একবার কথা বলেছিলেন। তখনও বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল, তার জামিন বা মুক্তি এ বিষয় নিয়ে আর যেনো কোনও কথা বলা না হয়। এরপর থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার বিষয় নিয়ে আর কোনও কথা বলেন নি।
গত কয়েক মাস ধরেই খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গটি নিয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দ আলোচনা করছেন না। এরপর তারা খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ মুক্তি, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ইত্যাদি নিয়ে কথা বলছেন। বেগম খালেদা জিয়া নিজেও এখন বিদেশ যেতে আগ্রহী নন। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন, বিশ্বে যে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি, এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি সঙ্গত নয়। আর তাছাড়াও আগামী ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার বর্তমান জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এরপর যে নতুন করে জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হবে সেখানে সরকারের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে তার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করা হতে পারে। তখন বিশ্বের করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে বলে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন। খালেদা জিয়া বিএনপির সব নেতাদের কাছে তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের মাধ্যমে একটি কঠোর বার্তা দিয়েছেন যে, কোনও নেতাই যেনো তার মুক্তি, জামিন বা বিদেশ যাওয়ার বিষয় নিয়ে অপ্রাসঙ্গিক কথা না বলে।
সূত্র : বাংলা ইনসাইডার