অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময় শেষ। চতুর্থ রেফারি দুই মিনিট ইনজুরি সময় দিলেন। যার প্রথম মিনিটেই গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক মানসিকতা নিয়ে খেলতে থাকায় তারা মাশুল দিয়েছে। ফলে গোল হজম করে ১-০ ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।
দীর্ঘ ১৪ বছর পর সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের সেমিফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। শক্তিশালী কুয়েতের বিপক্ষে আজ ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে একাদশে ফিরেছেন ডিফেন্ডার তারিক কাজী। সবশেষ ২০০৫ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে উঠেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। আজ ভারতের বেঙ্গালুরুতে ১৮ বছর পর ফাইনালে উঠার লক্ষ্যে কুয়েতের বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে দুই দল। প্রথমার্ধ গোলশূন্য ড্র হলেও দ্বিতীয়ার্ধে একাধিক সুযোগ পায় কুয়েত। কিন্তু বাংলাদেশ গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকুর দক্ষতায় শক্তিশালী কুয়েতকে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে রুখে দেয় জামাল ভূঁইয়ারা। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র’তে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। কিন্তু ১০৭তম মিনিটে আলব্লুসির গোলে ১-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে সাফের ফাইনালে উঠেছে কুয়েত।
প্রথমার্ধের দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। শেখ মুরসালিনের দুর্বল ফিনিশিংয়ে তা আর সম্ভব হয়নি। মাঠের ডান প্রান্ত থেকে ডি বক্সের ভেতরে রাকিব হোসেনের করা দুর্দান্ত এক পাসে গোলরক্ষকের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে বল পেয়েছিলেন মুরসালিন। কিন্তু কুয়েতের জালে ১৭ বছর বয়সী এই তরুণ গোল করতে ব্যর্থ হয়।
সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ বাংলাদেশ উল্টো ম্যাচের সপ্তম মিনিটে পিছিয়ে পড়তো। কিন্তু ডিফেন্ডার ইসা ফয়সালের নৈপুণ্যে সে যাত্রায় রক্ষা পায় হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল।
ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে আবারো এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল কুয়েত। কিন্তু ফরোয়ার্ডের ব্যর্থতায় তা আর সম্ভব হয়নি। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ বলার মতো আর কোন সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। ফলে শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের এগিয়ে যেত পারতো কুয়েত, কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ফিনিশিংয়ের অভাবে তা আর পারেনি। উল্টো ম্যাচের ৫৯ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো বাংলাদেশ, ডি বক্সের ডান দিক থেকে নেওয়া রাকিব হোসেনের দুর্দান্ত শট বারে লেগে ফিরে আসে।
আক্রমণের পরে এক আক্রমণ করা কুয়েত নিজেদের প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যেত ম্যাচের ৬১ মিনিটে। কিন্তু বাংলাদেশের দেয়াল হয়ে দাঁড়ান গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকু। ম্যাচে আর দুই মিনিট না যেতেই আবারো সুযোগ পায় কুয়েত। আবারো সেই জিকুর দৃঢ়তায় রক্ষা পায় বাংলাদেশ।
একের পর গোলের সুযোগ মিস করা কুয়েত আবারো ৬৮তম মিনিটে ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় গোলবঞ্চিত হয়। শেষদিকে আরো কয়েকটি সুযোগ পায় কুয়েত কিন্তু গোলে পরিণত করতে ব্যর্থ হয়। বাংলাদেশও কাউন্টার অ্যাটাকে একাধিক সুযোগ মিস করে। ফলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে গড়ায় সাফের প্রথম সেমিফাইনাল।
অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে কুয়েতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ের ১০৭তম মিনিটে টাইগারদের হৃদয় ভাঙে আব্দুল্লাহ আলব্লুসি। শেষ পর্যন্ত একাধিক চেষ্টা করেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে দীর্ঘ ১৮ বছর পর ফাইনালে উঠার স্বপ্ন ভঙ্গ হয় জামাল ভূঁইয়াদের।