সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বুধবার একটি বড় মসজিদের সামনে এক ইরাকি যুবকের কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইউরোপের অন্তত ২৮ দেশের এই শক্তিশালী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোট এমন কাজকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করে। একে ‘আপত্তিকর, এবং অসম্মানজনক এবং স্পষ্ট উসকানিমূলক কাজ’ বলে অভিহিত করে বিবৃতি দেয় জোটটি। খবর আরব নিউজ।
এমন ঘৃণিত কাজ কোনোভাবেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদর্শ ও কর্মকাণ্ডকে প্রতিফলিত করে না… বর্ণবাদ, জেনোফোবিয়া এবং অসহিষ্ণুতার প্রকাশে ইউরোপে কোনো স্থান নেই। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যখন মুসলমানরা ঈদুল আযহা উদযাপন করছিলেন (২৮ জুন) সেই দিনই তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানো পরিস্থিতিকে আরও শোচনীয় করে দিয়েছে। ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ানো অব্যাহত রেখেছে ইইউ। এখনই সময় পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সমঝোতার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে যে কোনো উত্তেজনা রোধে কাজ করবো।
স্টকহোমে বুধবার একটি বড় মসজিদের সামনে ইরাকি নাগরিক পবিত্র কুরআনের কয়েকটি পৃষ্ঠা পুড়িয়ে ফেলেন। কয়েক বছর আগে ইরাক থেকে পালিয়ে সুইডেনে আসেন ৩৭ বছর বয়সী সালওয়াল মোমিকা। তিনি ব্যাপক পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে মসজিদের সামনে এমন ঘৃণিত কাজটি করেন।
এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। সৌদির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে দেশটির সঙ্গে যোগ দিয়েছে বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায়। মুক্ত মত প্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবে পুলিশ তাকে কুরআন পোড়ানোর অনুমতি দেয়। কুরআন পোড়ানোর পর পুলিশ এ ঘটনা তদন্তের কথা জানালে মুসলিম বিশ্ব ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
কুরআন পোড়ানোর ঘটনা সুইডেনে নতুন কিছু নয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সুইডেনের উগ্র ডানপন্থি দলের এক নেতা স্কটহোমে তুরস্ক দূতাবাসের সামনে কুরআন পোড়ায়। এ ঘটনায় মুসলিম বিশ্ব নিন্দা জানায়।
পবিত্র ঈদুল আজহার দিন বুধবার (২৮ জুন) সুইডেনে একই ঘটনা ঘটল। এদিকে কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় ইরাক সরকার এক বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
কী কারণে কুরআন পোড়ানো হয়েছে তার জবাব চেয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী। এজন্য সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ব্যাখ্যা চেয়েছে ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
এদিকে সুইডেনে কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় আগামী সপ্তাহে মিটিং ডেকেছে ইসলামিক কোঅপারেশন সংস্থা। জেদ্দাতে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সৌদি আরব এবং ইসলামিক সামিটের সভাপতিকে আহ্বান জানানো হয়েছে।