আজ শুরু হচ্ছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলন। মস্কোর ‘নাকের ডগায়’ রুশ সীমান্তবর্তী দেশ লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে একত্র হয়েছেন এর ৩১ সদস্যরাষ্ট্রসহ অন্তত ৪০ দেশের শীর্ষ নেতারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানসহ নেতারা এরই মধ্যে ভিলনিয়াসে পৌঁছেছেন।
ভিলনিয়াসে মঙ্গল ও বুধবার দুদিনের সম্মেলন ঘিরে রণসাজে সেজেছে লিথুয়ানিয়া। রাশিয়া থেকে মাত্র ১৫১ কিলোমিটার এবং রুশ মিত্র বেলারুশ সীমান্ত থেকে ৩২ কিমি দূরে হতে যাওয়া সম্মেলন ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে লিথুয়ানিয়ায় এক হাজার সেনা পাঠিয়েছে ন্যাটোভুক্ত ১৬টি দেশ। বাল্টিক দেশটিতে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও পাঠানো হয়েছে।
ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটিতে পা রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ ৪০টি দেশের শীর্ষ নেতারা। তাদের নিরাপত্তায় রীতিমত দুর্গ বানিয়ে ফেলা হয়েছে ভিলনিয়াসকে।
লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গিতানাস নাওসেদা বলেন, বাইডেনসহ ৪০ দেশের নেতারা আসছে। এ সময় আমাদের আকাশ সুরক্ষিত না রাখা হবে দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।
বাল্টিক দেশ লিথুয়ানিয়া, এস্তোনিয়া এবং লাটভিয়া একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ছিল। এখন দেশগুলো একই সঙ্গে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।
সম্মেলন ঘিরে জার্মানি ১২টি প্যাট্রিয়ট মিসাইল লঞ্চার মোতায়েন করেছে। স্পেন দিয়েছে নাসমাস আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ফ্রান্স পাঠিয়েছে সিজার সেল্ফ-প্রপেলড হাউটজার ক্ষেপণাস্ত্র। ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্ক লিথুয়ানিয়ায় নিয়ে গেছে যুদ্ধবিমান। যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স পাঠিয়েছে ড্রোন-প্রতিরোধী সরঞ্জাম।
পোল্যান্ড এবং জার্মানি বিশেষ অপারেশন বাহিনী এবং অন্যরা সম্ভাব্য রাসায়নিক, জৈবিক, রেডিওলজিক্যাল এবং পারমাণবিক হামলা মোকাবিলা করার জন্য সরঞ্জাম দিয়েছে।
লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট নাওসেদা বলেন, সম্মেলন ঘিরে জোটের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রচেষ্টা দেখায় যে, বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে স্থায়ী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বসানো উচিত।
সম্মেলন চলাকালীন স্থানীয়রা বিঘ্ন এড়াতে চাইলে শহরের বাইরে অবস্থানের পরামর্শ দিয়েছেন ভিলনিয়াসের মেয়র। কারণ, মধ্য ভিলনিয়াসের বড় অংশ নিরাপত্তা রক্ষার্থে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রোববার সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এমনটা হবে না। তিনি বলেন, ইউক্রেনকে এখন ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করা মানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর যুদ্ধ শুরু হওয়া।
ন্যাটোর সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে জোটটির শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। এই সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর বাইরে আরেও যোগ দেবে দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।