আরো একবার পারলেন না ওনস জাবের। আরো একটা শনিবার উইম্বলডন ফাইনালে হারলেন তিউনিসিয়ার ষষ্ঠ বাছাই। গত বছর তিন সেটের লড়াইয়ে হেরেছিলেন এলিনা রিবাকিনার কাছে। এবার একতরফাভাবে স্ট্রেট সেটে হেরে গেলেন অবাছাই মার্কেতা ভন্দ্রোসোভার কাছে। চোখের পানিতে উইম্বলডনের সেন্টার কোর্ট ছাড়ার আগে আশ্বাস দিয়ে গেলেন এক দিন এই ট্রফি জিতবেনই। অবশ্য, আরব নারীদের মধ্যে তিনিই এত সাফল্য লাভ করেছেন। ফলে তার দিকে চোখ ছিল সবারই।
পর পর দু’বছর ফাইনালে হারার পরে অনেকেই বলছেন, জাবের বড় ম্যাচের খেলোয়াড় নন। তিনি চোকার। কোয়ার্টার ফাইনালে রিবাকিনাকে হারিয়ে গত ফাইনালের বদলা নিয়েছিলেন। সেমিফাইনালে ছিটকে দিয়েছিলেন দ্বিতীয় বাছাই আরিনা সাবালেঙ্কাকে। কিন্তু ফাইনালের ৮০ মিনিটে একবারও নিজের সেরা টেনিস খেলতে পারেননি জাবের। প্রথম থেকেই বেশ চাপে ছিলেন। যতটা না ভন্দ্রোসোভার কাছে হারলেন, তার থেকেও বেশি হারলেন নিজের কাছে। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর কোর্টে ধারে বসে ছিলেন শূন্য দৃষ্টিতে। যেন নিজেই নিজের কাছে উত্তর খুঁজছিলেন। নিজের মস্তিষ্কে হয়তো সদ্য শেষ হওয়া ম্যাচের রি-প্লে চালিয়ে দেখছিলেন। ছল ছল করছিল তার চোখ। কোর্ট ছাড়ার আগে পর্যন্ত শোকায়নি তার চোখের পানি।
ট্রফি নেয়ার পর কথা বলতে পারছিলেন না জাবের। উইম্বলডন ফাইনালে হারের কষ্ট যেন গলার কাছে দলা পাকিয়ে উঠছিল। তবু চেষ্টা করলেন কথা বলার। চেষ্টা করলেন কোচ, সাপোর্ট স্টাফ, পরিবারের সকলকে আশ্বস্ত করার। জাবের বললেন, ‘এই পরিস্থিতিতে কথা বলা ভীষণ কঠিন। এটাই আমার জীবনের সব থেকে কষ্টের হার।’ একটু থেমে অভিনন্দন জানালেন ফাইনালের প্রতিপক্ষকে। জাবের বললেন, ‘ভন্দ্রোসোভাকে অভিনন্দন। একটা দারুণ প্রতিযোগিতা শেষ হল ওর জন্য। তুমি দুর্দান্ত খেলোয়াড়। আমি জানি তোমার বেশ কিছু চোট আঘাত আছে। তাও তুমি আজ চ্যাম্পিয়ন। তোমায় দেখে আমার খুব ভালো লাগছে।’
প্রতিপক্ষকে হারিয়ে ফিরলেন নিজের কথায়। তখনো জাবেরের চোখ পানি ভর্তি। বললেন, ‘কোর্টে আজ আমার একটা কঠিন দিন ছিল। আমি কিন্তু হাল ছাড়ছি না। আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসব। দুটি সপ্তাহ ভালো কাটল। শুধু শেষটা ভালো হলো না। এখানে আমার পরিবার, আমার টিম রয়েছে। আমার উপর ভরসা রাখার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। তোমাদের কথা দিচ্ছি, এক দিন নিশ্চই জিতব। প্রমিস।’
কথা দিলেন দর্শকদেরও। তাদের উদ্দেশ্যে জাবের বলেছেন, ‘খেলা দেখতে আসার জন্য ধন্যবাদ। আরও বেশি ধন্যবাদ সমানে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য। আপনাদের সমর্থন আমাকে মুগ্ধ করেছে। কঠিন একটা সফর ছিল। কিন্তু এটাই টেনিস। আপনাদেরও কথা দিচ্ছি, আমি ফিরে আসব এবং উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হব।’