সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি মার্কিন সংসদ ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা তদন্তে এবং ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করার দায়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে তিনি মনে করছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে তিনি বলেছেন, রোববার রাতে সরকারের বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ তাকে জানিয়েছেন যে তাকে লক্ষ্য করে তাদের তদন্ত চলছে।
ট্রাম্প তার পোস্টে জানিয়েছেন যে একটি গ্র্যান্ড জুরির কাছে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে, ‘বেশির ভাগ সময়েই যার অর্থ গ্রেপ্তার এবং অভিযোগনামা দায়ের।’
তবে এনিয়ে বিশেষ কৌঁসুলি তাৎক্ষণিকভাবে গণমাধ্যমের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি।
কথিত ফৌজদারি অপরাধের জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এটি হবে তৃতীয় কোনো অভিযোগ।
অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে রয়েছে গোপনীয় সরকারি দলিল অপব্যবহারের অভিযোগ, যার জন্য স্মিথের আইনজীবী দল গত জুন মাসেই সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
এর বাইরে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে নিউইয়র্কে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাকে গোপনে অর্থ প্রদানের ব্যাপারে মিথ্যাচারের অভিযোগও আনা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে সেই মামলাটিতে বিচার শুরু হবে আগামী বছর মার্চ মাসে।
অন্যদিকে, গোপন দলিল সংক্রান্ত মামলার তারিখ ঠিক করা নিয়ে প্রেসিডেন্টের আইনজীবীরা এখনো সরকারি কৌঁসুলিদের সঙ্গে দরকষাকষি করছে।
তার নিজস্ব ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে ট্রাম্প দাবি করেছেন, তাকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে ‘যাতে বলা হয়েছে যে আমি ৬ই জানুয়ারির গ্র্যান্ড জুরি তদন্তের একটি টার্গেট, এবং আমাকে গ্র্যান্ড জুরির কাছে আত্মসমর্পণের জন্য মাত্র চার দিন সময় দেয়া হয়েছে, সব সময় যার অর্থ গ্রেপ্তার এবং অভিযোগনামা দায়ের।’
ট্রাম্প গত শরত মৌসুমে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন ঘোষণার পরপরই মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড স্মিথকে বিশেষ কাউন্সেল পদে নিয়োগ করেন।
তার দায়িত্ব হচ্ছে, প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়ার পর ট্রাম্প কীভাবে গোপনীয় দলিলের অপব্যবহার করেছেন, কীভাবে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল আক্রমণে সমর্থন দিয়েছেন এবং কীভাবে ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলকে উল্টে দেয়ার চেষ্টা করেছেন তা খতিয়ে দেখা।
৬ জানুয়ারির ঘটনা নিয়ে স্মিথের তদন্তে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানিসহ ট্রাম্প প্রশাসনের কয়েক ডজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এবং সাক্ষাৎকার নেয়া হয়।
পাশাপাশি ২০২০ সালের নির্বাচন নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদেরও বক্তব্য নেওয়া হয়, যেখানে তারা জানিয়েছেন যে ফলাফল বাতিল করার জন্য ট্রাম্প তাদের ওপর চাপ দিয়েছিলেন।
সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কোনো নির্দিষ্ট ফৌজদারি লঙ্ঘনগুলো বিবেচনা করা হচ্ছে রাষ্ট্রের বিশেষ কৌঁসুলির কার্যালয় তা নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি।
অ্যাটর্নি জেনারেল গারল্যান্ড জ্যাক স্মিথকে ‘২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ক্ষমতার বৈধ হস্তান্তরে হস্তক্ষেপ করার কিংবা ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের সার্টিফিকেট প্রদানে হস্তক্ষেপ’ প্রচেষ্টার তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।
খবর বিবিসি