কার্জন হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় , প্রকৃতির সাথে সখ্যতা মানুষের আদিম ঐতিহ্য। তবে নাগরিক জীবনের যান্ত্রিক কোলাহলে মানুষ ভুলতে বসেছে প্রকৃতির সাথে তার বন্ধুত্বের কথা। ইট-পাথরের নগরে তরুণ প্রজন্ম বেড়ে উঠছে তবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে প্রকৃতির স্পর্শহীন তাদের এই আধুনিকায়ন। মানব জীবনে প্রকৃতি আর বৃক্ষরাজির অবদান যে অনস্বীকার্য তা বারবার মনে করাবার প্রয়োজন পরে না। তবে তরুণ প্রজন্মের প্রকৃতি বিমুখতা চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেশের প্রবীণ বিশেষজ্ঞদের কপালে। এরূপ ক্রান্তিলগ্নে ২৭ জুলাই, ২০২৩ রোজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গনে দেখা গেলো একঝাঁক তরুণ-তরুণী ছোঁটাছুঁটি করছে এক গাছ থেকে আরেক গাছের পাদদেশে। সংগ্রহ করছে কার্জন হলে অবস্থিত প্রত্যেকটি গাছের তথ্য। তরুণদের এই দলটির মাঝে একজন প্রবীণ গল্পের ছলে উপস্থাপন করছেন পরিচিত গাছের নানাবিধ অপরিচিত তথ্য।
ভিন্নধর্মী আর গাছকে চেনার চমকপ্রদ এই আয়োজনটি মূলত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স সোসাইটি (ডিইউএসএস)। আর তাদের আমন্ত্রণে তরুণসমাজকে গাছ চেনাচ্ছেন উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিজ্ঞ অধ্যাপক ড. রাখহরি সরকার। তিনি উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার, প্ল্যান্ট জেনেটিক্স, প্ল্যান্ট হরমোন, মলিকুলার বায়োলজিসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় গবেষক। খোঁজ নিয়ে জানা যায় উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ কার্জন হলের পার্শ্বে উচ্চতর গবেষণার জন্য স্থাপন করেছে গ্রীণহাউস প্রযুক্তি সম্পন্ন একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন। আয়োজনের মূল কেন্দ্রস্থলে ছিল এই বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছগুলো। পৃথিবীর নানাপ্রান্ত থেকে সংগৃহীত বিলুপ্তপ্রায় নানা প্রজাতির গাছ বিশেষ টিস্যুকালচার প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশিও আবহাওয়ার উপযুক্ত করে রোপণ করা হয়েছে এই গার্ডেনে। তরুণ শিক্ষার্থীরা বিমোহিত হয়েছে ভিন্নধর্মী এসব গাছের নানাবিধ চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্যর কথা জানতে পেরে। এধরণের আয়োজন নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের পরিবেশের প্রতি আরো মনোযোগী আর পরিবেশ সচেতনতায় মূখ্য ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করে তুলবে বলে মনে করেন সায়েন্স সোসাইটির সদস্যরা৷ উল্লেখ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স সোসাইটি শিক্ষার্থীদের মাঝে বিজ্ঞানমনস্কতা বৃদ্ধির প্রয়াসে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে তাদের ভিন্নধর্মী আর চিন্তাশীল নানাবিধ আয়োজনের মাধ্যমে।