যুবকদের কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ২০৯ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। এটি ব্যাপক প্রযুক্তি নির্ভর সমম্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা (৩য় পর্যায়) প্রকল্প। বাস্তবায়ন করবে যুব উন্নয়ন অধদিপ্তর। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির মাধ্যমে লাখো যুবকের কাজের সুযোগ তৈরি করা হবে।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (যুব উন্নয়ন ও ঋণ শাখা) মাসুদা আকন্দ বাংলানিউজকে বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে যুবকদের কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও পরিবেশ উন্নয়ন করা হবে। খামারের পরিবেশ ঠিক রাখার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। জ্বালানি ও জৈব সার তৈরি হবে। এর মাধ্যমে লাখো যুবকের কর্ম পরিবেশ তৈরি হবে। পরিবেশ দূষণমুক্ত রেখে যুবকদের কাজের সুযোগ হবে।
যুবসমাজকে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে যুব সম্পদে রূপান্তর করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ ও উৎপাদনশীল কর্মসংস্থানের এবং আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। প্রকল্পটি ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে মিল রয়েছে।
গ্রামীণ যুবকদের র্কমসংস্থানরে সুযোগ সৃষ্টি; সরকারের নির্বাচনী ইশতহোর ‘আমার গ্রাম -আমার শহর’ অনুযায়ী আধুনকি নাগরিক সুবধিা সম্প্রসারণরে লক্ষ্যে নবায়নযাগ্যে জ্বালানি ব্যবহাররে সম্ভাবনা উন্মাচেন করা হবে। নারীদের জন্য ধোঁয়াহীন, আরামদায়ক, স্বাস্থ্যসম্মত এবং সময় সাশ্রয়ী রান্নার সুযোগ সৃষ্টি করা, যাতে তারা এ অতরিক্তি সময় অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যয় করতে পারে; রান্নার জন্য জ্বালানি কাঠের ব্যবহার কমিয়ে আনা এবং বন উজাড় রোধ করে দেশের উন্নয়ন করা; জৈব বর্জ্য চক্রায়নের মাধ্যমে কৃষি জমিতে ব্যবহারের জন্য জৈব সার উৎপাদন; বায়োগ্যাস প্লান্টে পচনশীল বর্জ্যের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা। খামারে বায়াগ্যোস পদ্ধতি প্রর্বতন সুবধিা সর্ম্পকে যুবকদের সচতেন করাও প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য।
সমন্বিত খামারে বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে বিকল্প জ্বালানি হিসাবে উৎপাদিত বায়োগ্যাসে আরামদায়ক, স্বাস্থ্যসম্মত এবং সময় সাশ্রয়ী রান্নার সুযোগ সৃষ্টি করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন করা, গবাদি পশু ও মুরগির খামারে দুর্গন্ধ ও দূষণমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ সৃষ্টি করা ও উন্নতমানের জৈব সার উৎপাদন করা সম্ভব।
জাপান সরকারের অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০০৬ থেকে ২০১১ মেয়াদে ১০টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হয়। এই পর্যায়ে ৪ হাজার ৩৮টি বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা হয়। এর ফলে ৫ হাজার ৯৭০ জন যুবক উপকারভোগী।
সরকারের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) ইমপ্যাক্ট (ফেজ-১) প্রকল্প মূল্যায়ন করে। এর ভিত্তিতে সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে মোট ৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্প নেওয়া হয়। জানুয়ারি ২০১৪ থেকে ২০১৯ মেয়াদে ‘দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রযুক্তি নির্ভর সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা (২য় পর্যায়)’ শিরোনামে প্রকল্পের ২য় পর্যায় সফলভাবে দেশের ৬১টি জেলার ৬৬টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হয়।
উল্লেখ্য, প্রকল্পের ২য় ফেজে মোট ৩১ হাজার বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে প্রকল্পটি সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্পের ৩য় পর্যায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমসমূহ হচ্ছে ৬৪ হাজার বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন। খামার স্থাপনের মাধ্যমে ১ লাখ ২৮ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি।
এছাড়া ১ লাখ ৪৮ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান ও কর্মশালা আয়োজ ও ১২৫ কোটি টাকার রিভলভিং ক্রেডিট ফান্ড পরিচালনা, যানবাহন ক্রয় যন্ত্রপাতি ক্রয়; এবং অন্যান্য কাজ পরিচালনা। দেশের ৬৪টি জেলার ৪৯২টি উপজেলা এটা নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্প এলাকা নির্বাচনের যৌক্তিকতা বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে গ্রামীণ যুবদের কর্মসংস্থান এবং আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে বিবেচনায় দেশের ৬৪টি জেলার সকল উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।