জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ব্যক্তিগতভাবে মানবতাবাদী ও সাম্যবাদী দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তিনি বলেন, জাতীয় কবি ঘুমিয়ে থাকুক শান্তিতে, আমরা তার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য আমরা জেগে আছি। বাংলাদেশ রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে জেগে থাকব আমরা।
আজ সোমবার (২৮ আগস্ট) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন সর্বদাই সোচ্চার। তারা উভয়ই ছিলেন অন্যায়-অত্যাচার, শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে। তারা অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করতেন। ছিলেন স্বাধীন চিত্তের অধিকারী। মানুষের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে তারা ছিলেন আপোষহীন।
কে এম খালিদ বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন, জাতীয় কবির চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলার জনগণ তা রুখবেই। এ কবির শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন সমাধিতে তাকে সমাহিত করা হয়েছে এবং তিনি সেখানেই ঘুমিয়ে আছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সব চাইতে উৎকৃষ্ট স্থান হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লকের দ্বিতীয় তলায় শেষ নিঃশ্বাসত্যাগ করেছেন কবি। সেই স্মৃতিধন্য ১১৭নং কেবিনটি জাতীয় কবির স্মরণে জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়েছে, যার সাক্ষী আমি নিজে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও কাজী নজরুল ইসলামের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে গড়ার পূর্ণতা দিতে হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকারের বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে। সে লক্ষ্য পূরণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের এখন থেকেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
উপাচার্য বলেন, শোষিত বঞ্চিত নিপীড়িত জনতার কবি, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী, বিশ্ব মানবতার কবি বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। জাতীয় কবির সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় কবির লেখনী থেকে প্রেরণা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, যাদের আত্মত্যাগের কারণে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি তাদের নতুন প্রজন্মকে ধারণ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতনী খিল খিল কাজী। আয়োজনে কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বিশিষ্ট সাংবাদিক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।