যতই দিন যাচ্ছে বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব বাড়ছেই। ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বের অন্যতম দূষিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়া। আর এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জনপ্রতি পাঁচ বছরেরও বেশি আয়ু কমতে পারে বলে সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে বাংলাদেশ একটি বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে দ্রুত নগর উন্নয়ন এবং ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানী ঢাকায় ভারী নির্মাণ কাজ চলছে। একারণেই বায়ু দূষণ ঘটছে বেশি।
দূষিত বায়ুর কারণে বছরে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছয় বছর আট মাস কমে যাচ্ছে। সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর হচ্ছে গাজীপুর। ঢাকার সবচেয়ে কাছের ওই শিল্প এলাকার মানুষদের আয়ু বায়ুদূষণের কারণে আট বছর তিন মাস কমে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে ১৯৯৮ সালের তুলনায় বায়ুদূষণ ৬৩ শতাংশ বেড়েছে। তবে ২০২০ ও ২০২১ সালের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে।
পাকিস্তানে বায়ু দূষণে মানুষের গড়পড়তায় আয়ু চার বছর কমছে। লাহোর দেশটির সবচেয়ে বেশি দূষিত শহর।
গত এক যুগে বিশ্বে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে চীন সবচেয়ে বেশি সফলতা পেয়েছে। দূষণ রোধে তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত, দূষণকারী শিল্পকারখানার সংখ্যা হ্রাস ও রাস্তায় পানি ছিটানোসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এতে চীনের বায়ুর মান ৪২ শতাংশে বেশি উন্নতি হয়েছে।
বাংলাদেশের ১৬ কোটি ৪৮ লাখ মানুষ সারা বছর দূষিত বায়ুর মধ্যে বসবাস করছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত মানমাত্রা, প্রতি ঘনমিটারে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা ৫ মাইক্রোগ্রামের চেয়ে বেশি।
প্রতিবেদনটিতে বিশ্বে অন্য যেসব কারণে সামগ্রিকভাবে গড় আয়ু কমে, তার সঙ্গে বায়ুদূষণের তুলনা টানা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি গড় আয়ু কমছে হৃদ্রোগ ও রক্তপ্রবাহের সমস্যার কারণে। এতে বাংলাদেশের একেক অধিবাসীর গড় আয়ু ছয় বছর আট মাস কমে যাচ্ছে। এর পরেই রয়েছে বায়ুদূষণ। ধূমপানের কারণে কমছে দুই বছর এক মাস, শিশু ও মাতৃত্বকালীন অপুষ্টিজনিত সমস্যার কারণে কমছে এক বছর চার মাস আয়ু।