ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনটি যদি কার্যকর হয় তাহলে এটাকে বিবর্তনমূলক আইন বলা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের শাস্তি পরিবর্তনের নামে বা কিছুটা কমিয়ে এনে, কিছু ধারার পরিবর্তন করার নামে শুধু খোলস পরিবর্তন করা হয়েছে খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনটি। এর মূল বিষয়গুলো অপরিবর্তিত আছে।
আজ বুধবার (৩০ আগস্ট) ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি আয়োজিত ‘খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ : পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো দুর্বলতা রয়ে গেছে। দুর্বলতা বললে কম হয়ে যায় অর্থাৎ যেসব কারণে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ ছিল আগের আইনে, নতুন খসড়াতেও সেসব বিষয় রয়ে গেছে। যার মধ্যে অন্যতম বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এই খসড়া আইনে রয়ে গেছে। যদিও শাস্তির পরিমাণ কমানো হয়েছে, এতে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু অন্যদিক থেকে এটা বিবর্তনমূলক আইন হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন যেটা কালো আইন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল সাইবার সিকিউরিটি আইনের যে খসড়া এখন আছে সেটা যদি কার্যকর হয় তাহলে এই আইনও কালো আইন হিসেবে চিহ্নিত হবে। এখানে বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হবে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিজের মত প্রকাশ করলে ঝুঁকির সম্মুখীন সেই বিষয়টিই রিপিট হবে এখানে।
টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা আশা করব, সরকারের কাছে সংশ্লিষ্ট অংশীজন যারা আছেন, যারা বিশেষজ্ঞ, এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আছে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সাইবার সিকিউরিটি আইনের যেমন চর্চা থাকে, যেমন উদ্দেশ্য থাকে সব বিষয় বিবেচনা করে এই আইনের খসড়াকে ঢেলে সাজাতে হবে।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইনের মূল যে উদ্দেশ্য সেখানে কিন্তু মানুষের বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করে এমন বিষয় থাকার কথা নয়। যদি আমরা মত প্রকাশের নামে বা তথ্য প্রকাশের নামে কারও অধিকার হরণ করি, কারও মানহানি করি এর জন্য কিন্তু আমাদের প্রচলিত আইন আছে। প্রচলিত আইনে বিচার হতে পারে। সাইবার সিকিউরিটি আইনে এই বিচার করার দরকার আছে বলে আমরা মনে করি না।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সাইবার সিস্টেমকে নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি এখানে সেভাবে না রেখে মানুষ যে তার মত প্রকাশ করবে, চিন্তা প্রকাশ করবে, মন্তব্য করবে সেই জায়গাটা হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে এই খসড়া আইনে। এটি যেহেতু এখনও খসড়া অবস্থায় আছে তাই আমরা মনে করি এটিকে এখনো ঢেলে সাজানোর সুযোগ আছে।’